বকশীগঞ্জে ওসির তৎপরতায় কোনঠাসা অবৈধ ডলার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট!

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

ডলার ব্যবসা, জাল টাকা ব্যবসা ও মাদক সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছেন জামালপুর বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম সম্রাট। ওসির কঠোর তৎপরতায় কোনঠাসা হয়ে পড়েছে ওইসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ওসির এমন ভূমিকায় স্বস্তি ফিরেছে বকশীগঞ্জ উপজেলায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ডলার ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা ও মাদক পাচার চক্র সক্রিয় ছিল। বিশেষ করে উপজেলার কয়েকটি এলাকায় মাদক ব্যবসা ও ডলার ব্যবসার জন্য ছিল নিরাপদ স্থান ছিল বলে মনে করা হতো। স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে মাদক কারবারী শুরু করেন। বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার মেষেরচর , বড়ইতারী, মেরুরচর ইউনিয়নের ভাটি কলকিহারা, সর্দার পাড়া , মাদারেরচর, মেরুরচর এলাকায় অবৈধ ডলার ব্যবসা গড়ে উঠে। প্রতিনিয়ত এই এলাকার ডলার ব্যবসা সিন্ডিকেটটি জেলা ও আন্তঃজেলা ডলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখে শক্তিশালী ডলার ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকতেন। এতে করে অনেকেই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ আবার এই সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। বকশীগঞ্জ পৌর শহরের এক জনপ্রতিনিধি ও তার পরিবারের সদস্যদের নেতৃত্বে এলাকায় এই সিন্ডিকেটটি ত্রাস সৃষ্টি করে মানুুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। এদের প্রতারণার স্বীকার হয়ে পথে বসেছেন অনেকেই।

করোনাকালীন সময়ে ডলার ব্যবসায়ীদের এই সিন্ডিকেটটি হঠাৎ মাথাচাড়া দেয়। মেষেরচর, বড়ইতারী , মেরুরচর সহ কয়েকটি এলাকায় ডলার ব্যবসার কার্যক্রম বেড়ে গেলে মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।

এ নিয়ে বকশীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম সম্রাট মতবিনিময় করেন এলাকার সুধীজনদের সাথে। এসব দুর্বৃত্ত ও ডলার ব্যবসায়ীদের রুখে দিতে স্থানীয় জনসাধারণকে সচেতন হওয়া সহ পুলিশকে সহযোগিতার আহ্বান জানান ওসি শফিকুল ইসলাম সম্রাট।

এরপরই একশন শুরু করেন তিনি। বকশীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম সম্রাট পুলিশের সর্বাত্মক শক্তি প্রয়োগ করে লন্ডভন্ড করে দেন ওই সিন্ডিকেটের হোতাদের। মেষেরচর এলাকা সহ চিহ্নিত এলাকায় অভিযান শুরু করেন তিনি। ওসির কঠোর অবস্থান ও জোর তৎপরতার কারণে কোনঠাসা হয় পড়েন এসব অবৈধ ব্যবসায়ীরা। কয়েকজনের নামে দেওয়া হয় ডলার ব্যবসার মামলা। আটক করা হয় এই ব্যবসার সাথে জড়িত কয়েকজনকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ব্যবসায় তরুন ও নারীদের বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে এবং ব্যবসার কৌশল হিসেবে নারী ও তরুন ছেলেদের অন্তুর্ভুক্ত করা হয়। তবুও পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না অবৈধ ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে বকশীগঞ্জ থানায় কয়েকটি জাল টাকা ব্যবসা ও ডলার কারবারী করার অভিযোগ মামলা হয়েছে।

বকশীগঞ্জ থানা পুলিশের এমন তৎপরতায় বকশীগঞ্জ থেকে অন্য জেলায় পুরোদমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ওই সিন্ডিকেটটি। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বকশীগঞ্জ পৌর শহরের মেষেরচর এলাকার এক জনপ্রতিনিধির দুই ছেলেসহ ৫ জনকে অবৈধ ডলার সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার করেন শেরপুর জেলা পুলিশের সদস্যরা।

গত শনিবার ভারতীয় রুপি সহ বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ আরো ৬ জনকে আটক করেছেন। বিচ্ছিন্নভাবে দুই একজন গোপনে তাদের কার্যক্রম চালালেও পুলিশের হাত থেকে তারা রক্ষা পাবে না।

স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি , এই সিন্ডিকেটের মেরুদন্ড ভেঙে দিলেই তারা আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না।

পুলিশের কঠোরতার কারণে আগের চেয়ে অপকর্ম ও অপতৎরতা কমে যাওয়ায় ওসি শফিকুল ইসলাম সম্রাটের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন স্থানীয় মানুষ।

বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম সম্রাট জানান, ডলার সিন্ডিকেট, মাদক সিন্ডিকেট সহ যেকোন অপকর্ম রোধে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে। একারণে ডলার ব্যবসায়ীরা অন্য জেলা বা উপজেলায় গিয়ে অপকর্ম করার চেষ্টা করছে। তিনি আরো বলেন এই সিন্ডিকেটে যারাই থাকুক না কেন তাদের দমন করা হবে।