বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে নেই রিয়াদ, ফিরলেন লিটন

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ আগে থেকে ওঠা গুঞ্জনই সত্যি হলো। বাজে ফর্মের কারণে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ দলে জায়গা হয়নি অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ ও সবচেয়ে বেশি রান করা ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ। তবে জয়ের সম্ভাবনা থাকা সত্বেও অতীতে তার মন্থর ব্যাটিংয়ের কারনে কয়েকটি ম্যাচে হারতে হয়েছে টাইগারদের।

পারফরমারের জায়গায় প্রভাব বিস্তার করতে পারে এমন খেলোয়াড়দের প্রাধান্য দেওয়ায় অভিজ্ঞদের দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছে।

খারাপ পারফরমেন্স করায় এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়েছেন এনামুল হক বিজয়, নাইম শেখ, পারভেজ হোসেন ইমন ও মাহেদি হাসান। এশিয়া কাপে ব্যর্থতার পর এই ফরম্যাট থেকে অবসর নেন আরেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিম।

আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘মাহমুদুল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, সে আমাদের অনেক ভালো ভালো খেলা উপহার দিয়েছে। আমাদের বর্তমান যে টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট, এক বছরের যে পরিকল্পনা আমাদের দিয়েছেন তিনি, সেটা মাথায় রেখে আমরা এগোচ্ছি। সেই অনুযায়ী টিম ম্যানেজমেন্টের সবার সাথে আলোচনা করে সকলের সম্মতিতে মাহমুদুল্লাহকে বাইরে রাখা হয়েছে।’

অষ্টম টি-টেয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য আবেদিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেলের ঘোষিত দলে বিস্ময়কর কিছু নেই।
ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপ খেলতে না পারা লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান ও হাসান মাহমুদ প্রত্যাশিতভাবেই দলে ফিরেছেন। আরও দলে ফিরেছেন জিম্বাবুয়ে সফর ও এশিয়া কাপ মিস করা ইয়াসির আলি রাব্বি। টানা ব্যর্থতার কারণে টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়া ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত দলে ফিরেছেন। আহামরি কোন পারফরমেন্স না থাকা সত্বেও ব্যাকআপ ওপেনার হিসাবে নেয়া হয়েছে শান্তকে।

যদিও শান্তর দলে অর্ন্তভুক্তিতে প্রশ্ন উঠেছে। আবেদিন জানান, ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরমেন্সে কারণে তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া কঠিন ছিল।

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক নান্নু বলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে সে ভালো খেলেছে। বিপিএলে অনেক বাংলাদেশি ব্যাটার সেঞ্চুরি করতে পারেনি। কিন্তু শান্ত রান করেছে।

ঘোষিত দল থেকে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা নিতে যাচ্ছেন হাসান মাহমুদ ও ইয়াসির। দলের অন্যান্য সদস্যদের বিশ^কাপে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত প্রতিটি টুর্নামেন্টেই অংশ নেওয়া বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হতে যাচ্ছেন সাকিব। তার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। ঐ আসরে দু’টি ম্যাচেই হেরেছিলো বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরমেন্স মোটেও ভালো নয়। মূল আসরে মাত্র একটি ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। সেটিও ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে। মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাটিং তান্ডবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিলো টাইগাররা।

বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত একই স্কোয়াড নিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর নিউজিল্যান্ডে যাবার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ছাড়াও ত্রিদেশীয় সিরিজের অন্য দল পাকিস্তান।

যদিও ত্রিদেশীয় সিরিজের পর অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে সপ্তাহব্যাপী কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার কথা ছিল বাংলাদেশের। তবে খেলোয়াড়দের ব্যস্ত সূচী কারনে ক্যাম্পের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ম্যানেজমেন্ট।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১৭ ও ১৯ অক্টোবর যথাক্রমে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।

২৪ অক্টোবর হোবার্টে গ্রুপ-‘এ’র রানার্স-আপ হয়ে আসা দলটির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ। ২৭ অক্টোবর সিডনিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, ৩০ অক্টোবর ব্রিজবেনের গাব্বাতে গ্রুপ-‘বি’ চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এরপর ২ নভেম্বর শক্তিশালি ভারতের বিপক্ষে এবং ৬ নভেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে। শেষ দু’টি ম্যাচই হবে অ্যাডিলেড।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নুরুল হাসান সোহান (সহ-অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস, ইয়াসির আলি চৌধুরি, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, নাসুম আহমেদ, এবাদত হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

স্ট্যান্ডবাই : শরিফুল ইসলাম, সৌম্য সরকার, রিশাদ হোসেন, শেখ মাহেদি হাসান।