দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় মারা গেছেন সর্বোচ্চ ২৮ জন

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সর্বোচ্চ ২৮ জন। এ পর্যন্ত এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৮০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৩২ জন। বর্তমানে এ ভাইরাসে শনাক্ত ৩৩ হাজার ৬১০ জন।

২৪ মে দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক চিকিৎসক নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৯০১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৪১৫ জন।

শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ বলে তিনি জানান।

গতকালের চেয়ে আজ ৩৪১ জন কম আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৮৭৩ জন।

নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৯ হাজার ১৮৪টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৯ হাজার ৯৭৭টি। গতকালের চেয়ে আজ ১৯৩টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৪৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮ হাজার ৯০৮টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১০ হাজার ৮৩৪টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৯২৬টি নমুনা পরীক্ষা কম হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৮৩টি।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ২৩ জন এবং নারী ৫ জন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ জন। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৭ জন এবং সিলেট বিভাগের ১ জন রয়েছেন। ঢাকা বিভাগের ২০ জনের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ১৫ জন, নারায়ণগঞ্জে ৩ জন ও গাজীপুরের ২ জন। চট্টগ্রাম বিভাগের ৭ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর ১ জন, চট্টগ্রাম জেলায় ২ জন, নোয়াখালীতে ২ জন, চাঁদপুরে ও কুমিল্লায় ১ জন করে রয়েছেন। আর সিলেট বিভাগের সিলেট সিটি করপোরেশনে ১ জন রয়েছেন।

চিকিৎসক নাসিমা সুলতানা জানান, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে হাসপাতালে ২৩ জন, বাসায় ৪ জন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন ১ জন।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ২৫৩ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৪ হাজার ৪৪৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৪ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ১৬৩ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ৬ হাজার ১৪টি। এসব হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৩৯৯টি, ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১০৬টি।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইনে মিলে কোয়ারেন্টাইনে করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৩ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৬৩ হাজার ৪৭৯ জনকে কোয়ারেন্টাইনে করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাই ন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৭ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৮ হাজার ৩৪৬ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৫ হাজার ১৫৩ জন। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংগৃহীত হয়েছে ৩৩ হাজার ৩১০টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৭৩৭টি। ২৪ ঘন্টায় বিতরণ হয়েছে ৩ হাজার ৯০২টি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২০ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৪টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৮০৩টি পিপিই মজুদ রয়েছে।

গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪০৭টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার ৪০২টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ১৫৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ১৪ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিআর’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।

চিকিৎসক নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় আগত ১ হাজার ১৪৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮২২ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ১১৯ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭২ হাজার ২৭৮ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২০৯ জন এবং এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৫৬ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৫৩৬ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫১ লাখ ৩ হাজার ৬ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৬৬৩ জন এবং এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪০১ জন।

আপনার সুস্থতা আপনার হাতে উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, রমজানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।

তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।সূত্র:বাসস।