মাদারগঞ্জে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা, স্বামী আটক, শ্বশুর-শাশুড়ি পলাতক

গৃহবধূ আকলিমার লাশ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় স্বামীর বাড়িতে আকলিমা (২৫) নামের এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৯ অক্টোবর ভোররাতে উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। সকালে ওই বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর স্বামী অটোচালক রাশেদুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। একইসাথে পুলিশ ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

পুলিশ ও ওই গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আকলিমা বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার পাকেরদহ গ্রামের রহিজল শেখের মেয়ে। চার বছর আগে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চর পাকেরদহ ইউনিয়নের চরপাকেরদহ পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে অটোচালক রাশেদুল ইসলামের (৩০) সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আকলিমা স্বামীর বাড়িতেই থাকতেন। তাদের দুই বছর বয়সের এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

পারিবারিক কলহের জের ধরে রাশেদুল প্রায়ই তার স্ত্রী আকলিমাকে মারধর করতেন। স্বামীর বাড়িতে ২৯ অক্টোবর ভোরে আকলিমা মারা যাওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে প্রতিবেশীরা মাদারগঞ্জ থানায় খবর দেন। পুলিশ সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে আকলিমার স্বামী রাশেদুলকে আটক করে লাশসহ তাকে থানায় নিয়ে যায়।

রাতের কোন এক সময় রাশেদুল ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আকলিমাকে শারীরিক নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে থাকতে পারে বলে তার পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয়রা ধারণা করছেন। আকলিমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে আকলিমার শ^শুর-শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যান্যরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।

খবর পেয়ে সারিয়াকান্দি থেকে আকলিমার বাবা রহিজল শেখ ও তার সহোদর বড়ভাই রেজাউল ইসলামসহ পরিবারের অন্যান্য স্বজনরা মাদারগঞ্জ থানায় গিয়ে আকলিমার লাশ দেখে কান্নায় মুর্ছা যান। খবর পেয়ে জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার, মাদারগঞ্জ সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. সামিউল আলম ও মাদারগঞ্জ মডেল থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার এ প্রতিবেদককে বলেন, গৃহবধূ আকলিমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মনে হচ্ছে তাকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আটক রাশেদুল থানা হেফাজতে রয়েছে। ওই নারীর সহোদর বড় ভাই রেজাউল ইসলাম তার বোনকে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করবেন। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।