মাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিন্নাহর বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের অনাস্থা

ইউপি সদস্যদের অভিযোগ গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম. দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়ে তাকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন একই পরিষদের নয়জন ইউপি সদস্য।

১২ আগস্ট দুপুরে তারা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করে ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

মাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে পরিষদের নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে আটটি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও একজন সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য স্বাক্ষর করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ টিআর কাবিখা প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ না করেই টাকা আত্মসাত, কর্মসৃজনের ১০০ দিনের কর্মসূচির বিভিন্ন প্রকল্পে প্রকৃত শ্রমিকদের টিপসই না নিয়ে জাল টিপসই দিয়ে প্রকল্পের টাকা ব্যাংক থেকে তুলে আত্মসাত, প্রকল্প কমিটি গঠনের নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে অধিকাংশ প্রকল্প চেয়ারম্যান নিজের নামে করেন এবং ইউপি সদস্যদের নাম দিলেও ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজেই ব্যাংক থেকে সব টাকা তুলে আত্মসাত করেন। এছাড়াও এলজিএসপির প্রকল্পের কাজ না করেই জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সেইসব প্রকল্পের সব টাকা, স্থানীয় মাহমুদপুর বাজারে পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের জমিতে নির্মিত দোকানঘর ভাড়ার জামানত ও ঘরভাড়ার টাকা, নয়টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে আদায় করা ট্যাক্সের টাকা, ইউপি সদস্য ও নারী সদস্যদের সম্মানিভাতার টাকাও আত্মসাত করে আসছেন।

অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ফজলুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনায় ইউপি সদস্যদের পাস কাটিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তিনি প্রভাবশালী একজন আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তার হুমকিতে খোদ ইউপি সদস্য ও নারী ইউপি সদস্যরাও কোনঠাসা হয়ে পড়েছি। আমরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছি। তাকে অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান এই ইউপি সদস্য।

এদিকে মাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে এ প্রতিবেদককে বলেন, ইউপি সদস্যরা আমার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে যেসব অভিযোগ করেছে তার সবগুলোই মিথ্যা ও বানোয়াট। সামনে নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। তাই হয়তো আমার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ ইউপি সদস্যদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই মাঠে নেমেছে। ইউপি সদস্যদের নিয়েই আমি পরিষদের সব কাজ করি। তারা নিয়মিত পরিষদেরও আসেন। তাদেরকে বা কাউকে হুমকি দেওয়ার মতো এখানে কোন ঘটনা ঘটেনি।