বকশীগঞ্জে কিন্ডার গার্টেন শিক্ষকদের মানবেতর জীবনযাপন

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় অর্থের অভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন কিন্ডার গার্টেন (কেজি) এর শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এতে করে তারা দুশ্চিন্তা ও ঋণ করে কোন মতে সংসার চালাচ্ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেজি স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৫২টি কিন্ডার গার্টেন (কেজি) বিদ্যালয় রয়েছে। সব মিলিয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৬৫০ শিক্ষক-কর্মচারী কেজি বিদ্যালয়ের সাথে জড়িত রয়েছেন।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে শিশুদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন। সেই থেকে কয়েক দফা এই মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু সবশেষ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলে হতাশায় পড়ে যান কেজি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রায় ৫ মাস ধরে প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন আদায় করতে না পেরে ধার-দেনা, ঋণ করে সংসার চালাচ্ছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। বেশিরভাগ কেজি স্কুলের শিক্ষকরা আর্থিক সংকটে ভুগছেন। অনেকেই শুধুমাত্র কেজি স্কুলের ওপর নির্ভর করেই সংসার চালাতো।

করোনা পরিস্থিতির কারণে তারা পরিবার নিয়ে কঠিন অবস্থার মধ্যে দিনানিপাত করছেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে গিয়ে প্রাইভেট পড়ানোও বন্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষকরা। ফলে পুরোপুরি আয়ের পথ বন্ধ রয়েছে কিন্টার গার্টেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। আবার সম্মানের ভয়ে যেমন তেমন কাজও করতে পারছেন না এইসব শিক্ষকরা।

এমতাবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনানিপাত করছেন তারা।

এসব শিক্ষকরা করোনা উপলক্ষে প্রনোদনা চেয়েছেন সরকার প্রধানের কাছে। তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর প্রনোদনা চেয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।

কিন্তু কোন ফল পাওয়া যায়নি। তারপরও তারা প্রধানমন্ত্রীর দিকে চেয়ে রয়েছেন।

ডলফিন আইডিয়াল একাডেমির অধ্যক্ষ জাকিউল ইসলাম সোহেল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায় অনেক সেক্টরকে ও কর্মহীনদের জন্য প্রনোদনার ব্যবস্থার করেছেন তাই আশা করছি তিনি আমাদের দিকেও নজর দিবেন।

এ বিষয়ে জিনিয়া ওমর মডেল একাডেমির অধ্যক্ষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলী জানান, আমাদের কয়েকশ শিক্ষক করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন। বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকায় অভিভাবককরা বেতন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে শিক্ষকরা অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছেন|

তিনি সরকারের কাছে কেজি শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রনোদনা দেওয়ার জোর দাবি জানান। এছাড়াও তিনি বিদ্যালয়গুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম খুলে দেওয়ার জাবি জানান।