বকশীগঞ্জে ৩৬০০০ পানিবন্দি মানুষ দুর্ভোগে, মৃত্যু ২

বন্যায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে বিলের পাড় গ্রামের মানুষদের। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় বন্যার পানি কিছুটা কমেছে। তবে কচ্ছপ গতিতে পানি কমায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বন্যার্ত এলাকার মানুষের। বন্যায় সাধুরপাড়া, মেরুরচর, বগারচর ও নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের ৩৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। বন্যার পানিতে ডুবে ৩ জুলাই বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার কাগমারী পাড়া গ্রামের জিসান (৩) নামে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বানভাসি মানুুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ায় সহজেই ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। বিশেুষ করে চারণভূমি ও খোলা মাঠগুলো পানি নিচে থাকায় গোখাদ্যের সংট দেখা দিয়েছে। সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বিলেরপাড়, মদনের চর, চর গাজীরপাড়া, চর কামালের বার্ত্তী, কতুবের চর ও উত্তর আচ্চাকান্দি গ্রামের সব যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এ কারণে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই এলাকাগুলো। কোন বানভাসি মানুষ কোন রকমে নৌকা, কলা গাছের ভেলা তৈরি করে প্রয়োজন মেটাচ্ছেন।

একদিকে দুর্ভোগ অন্যদিকে নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

গত ১০ দিনে বকশীগঞ্জ উপজেলার বাংগালপাড়া, আইরমারী, চর কামালের বার্ত্তী, দক্ষিণ কুশলনগর, পূর্ব কলকিহারা, উজান কলকিহারা গ্রামের অর্ধশত বসত ভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর আজাদ জানান, কয়েকদিনের বন্যায় রোপা আমনের বীজতলা, সবজি, আউশ ধান, পাট সহ ২ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

মেরুরচর ইউনিয়নের পূর্ব কলকিহারা গ্রামের সফল সবজি চাষী হালিমা বেগম জানান, এবার তিনি সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে শসা, পটল, করলা, বেগুন, ঢেঁরস চাষ করেছিলেন। কিন্তু আকস্মিক বন্যায় তার সব খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে করে বড় ধরনের ক্ষতির হিসাব গুনতে হয়েছে তাকে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হাসান মাহাবুব খান জানান, এখন পর্যন্ত বন্যার কারণে ৮ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে ২২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও বিতরণ করা হবে।