জামালপুর পিসিআর ল্যাব চালু হয়নি, মেডিক্যাল কলেজছাত্রীসহ নতুন আক্রান্ত ৫

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর জেলায় দু’দিন বিরতির পর ২৯ মে একজন মেডিক্যাল কলেজছাত্রীসহ নতুন করে আরও পাঁচজনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলায় তিনজন এবং মেলান্দহ উপজেলায় দু’জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ২০৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। জেলার সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অপরদিকে ২৯ মে মাঝ রাত পর্যন্ত জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পিসিআর ল্যাব চালু হয়নি। ল্যাবের যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ায় ২৭ মে থেকে সেখানে করোনার নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। জামালপুর জেলায় সংগৃহীত নমুনাগুলো গত ২৮ মে থেকে ময়মনসিংহের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে।

জামালপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ থাকায় গত দু’দিনে ময়মনসিংহ পিসিআর ল্যাবে পাঠানো ৩০৭টি নমুনার মধ্যে গত ২৯ মে সেখানে ১১৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। বাকি নমুনাগুলোর করোনা নেগেটিভ এসেছে। নতুন শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলায় তিনজন এবং মেলান্দহ উপজেলায় দু’জন শনাক্ত হয়েছেন।

মেলান্দহ উপজেলায় নতুন করে শনাক্ত হওয়া দু’জনের মধ্যে মেলান্দহ পৌরসভার নাগেরপাড়া এলাকার এক যুবক (৩০) এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার কয়ড়া গ্রামের ২৯ বছর বয়সের এক যুবক রয়েছেন। তাদেরকে নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

জামালপুর সদর উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে জামালপুর সদর হাসপাতালের একজন প্যাথলজিস্টের মেয়ে ও ময়মনসিংহের কমিউনিটি বেইসড মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী (২২), শাহবাজপুর ইউনিয়নের পটল গ্রামে ঢাকা থেকে আসা ৫০ বছর বয়সের এক ব্যক্তি এবং দিগপাইত ইউনিয়নের চিনাইল গ্রামের একজন গৃহিনী (৩৫)। তাদের মধ্যে চিনাইল গ্রামের ওই নারী ও পটল গ্রামের ওই ব্যক্তিকে জামালপুরে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। ওই মেডিক্যাল কলেজছাত্রী ময়মনসিংহ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করে ময়মনসিংহের আমিরাবাদ এলাকায় নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। তাকে সেখানেই হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জামালপুর ল্যাব সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১২ মে থেকে জামালপুর পিসিআর ল্যাব চালু হয়। এই ল্যাবে প্রতিদিন ৯৩টি করে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। একদিনের মধ্যেই নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পাওয়ায় চলমান করোনাভাইরাস নির্মূল ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমসহ সার্বিক কার্যক্রমে বেশ সুবিধা হচ্ছিল জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের। এর আগে ময়মনসিংহের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পাঠানো হলে সেখানে জট লেগে যাওয়ায় নমুনা পরীক্ষা ও এর প্রতিবেদন আসতে বেশির ভাগ সময় তিন থেকে পাঁচদিন সময় লাগতো।

কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২৭ মে থেকে জামালপুরের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ময়মনসিংহে নমুনা পাঠিয়ে ফের সেখানে জটে পড়ছে জামালপুরের নমুনাগুলো। জামালপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে গত ২৮ ও ২৯ মে দু’দিনে ময়মনসিংহে নমুনা পাঠানো হয়েছিল ৩০৭টি। এর মধ্যে ২৯ মে ১১৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে সেখানে। ওই দুই দিনের নমুনা থেকে ময়মনসিংহের ল্যাবে জমা থাকা আরও ১৯২টি নমুনাসহ ৩০ মে সকালে পাঠানো নমুনাগুলো যুক্ত হলে নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে জট আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত সময়ের মধ্যে জামালপুর পিসিআর ল্যাব চালু করার দাবিও উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।