বকশীগঞ্জে করোনা মহামারীতে দুঃস্থদের পাশে গাজী পরিবার ও আলহাজ গাজী আমানুজ্জামান মডার্ন কলেজ!

বকশীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গাজী পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন ইউএনও আ. স. ম. জামশেদ খোন্দকার। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে মানুষের জীবন-জীবিকায়। করোনার কারণে যখন সব কিছু বন্ধ তখন অসহায়, দুঃস্থ পরিবারগুলো কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ঐহিত্যবাহী গাজী পরিবার।

জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার আলীর পাড়া গ্রামের ঐহিত্যবাহী গাজী পরিবার করোনা দুর্যোগে অসহায়, দরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। শুধু তাই নয় গাজী পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত আলহাজ গাজী আমানুজ্জামান মডার্ন কলেজেও ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন এই মহামারীতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকায় যখনই কোন দুর্যোগ হয় তখনই মানুষের পাশে দাঁড়ান আলীর পাড়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী গাজী পরিবার।

মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে পরিচিত এই পরিবারের কারণে পাল্টে গেছে অজপাড়া গা আলীর পাড়াসহ আশ পাশের কয়েকটি গ্রাম।

গত মার্চ থেকে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুুর্ভাব দেখা দিলে গাজী পরিবারের অন্যতম সদস্য ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ গাজী মো. আমানুজ্জামান ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অর্থায়নে স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৮০০টি সাবান এবং আলীর পাড়াসহ বিভিন্ন সড়কে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়।

প্রথম ধাপে হতদরিদ্র ও কর্মহীন ৫১০টি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, লবণ, পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি, আলু, ট্যাংক ও মিষ্টি কুমড়া বিতরণ করা হয়।

দ্বিতীয় ধাপে পবিত্র রমজান উপলক্ষে আরো ১৪০টি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেওয়া হয়।

তৃতীয় ধাপে পল্লী বিদ্যুতের শ্রমিক, গরিব শিক্ষার্থী, জেলে পরিবার, বিধবা ও বেঁদে সম্প্রদায়ের ১২৫টি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়।

বকশীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গাজী পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

গাজী পরিবারের অন্যতম সদস্য ও আলহাজ গাজী আমানুজ্জামান মডার্ন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সমাজসেবক আলহাজ গাজী মো. আমানুজ্জামানের সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ. স. ম. জামশেদ খোন্দকার ও কলেজের শিক্ষকরা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

এদিকে গাজী পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত আলহাজ গাজী আমানুজ্জামান মডার্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা করোনাভাইরাসের কারণে শ্রেণি কক্ষের পাঠদান থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এসব শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এই কলেজে অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। গত ২৪ এপ্রিল থেকে আলহাজ গাজী মো. আমানুজ্জামানের পরামর্শে এই কলেজের শিক্ষকরা এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। প্রতিদিন ৮টি বিষয়ের উপর অনলাইনে পাঠদান করা হয়। এতে করে ঘরে বসে শিক্ষাথীরা ক্লাসের সুবিধা পাচ্ছেন।

“আলহাজ গাজী আামানুজ্জামান মডার্ন কলেজ” নামে পেজ থেকে প্রতিদিন অনলাইন ক্লাসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

অনলাইন ক্লাসের ফলে শুধু আমানুজ্জামান মডার্ন কলেজ নয় বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরাও এর সুবিধা পাচ্ছেন। যতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে ততদিন অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

এছাড়াও কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন আলহাজ গাজী আমানুজ্জামান মডার্ন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী।

তারা কৃষকের ধান কাটা কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। চারটি গ্রুপের মাধ্যমে ৫০ জনের একটি টিম ধান কাটার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

বিনামূল্যে ধান কাটা ও মাড়াই করার জন্য ফরম তৈরি করা হয়েছে এবং ফরমগুলো বিভিন্ন এলাকার কৃষকের কাছে পাঠানো হয়েছে। কোন কৃষক ধান কাটার চাহিদা দিলেই এই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও রোভার স্কাউট সদ্যরা ধান কেটে দিয়ে আসবেন।

গাজী পরিবারের এসব উদ্যোগে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন এই পরিবারটি। বিশেষ করে দানবীর ও শিক্ষানুরাগী আলহাজ আমানুজ্জামানের মানবিক কার্যক্রমে মানুষ মুগ্ধ হয়েছেন এলাকার মানুষ।

তাদের এধরনের মানবিকতা ও মানুষের প্রতি ভালবাসা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশা সচেতনমহলের।