শেরপুরে ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষকের যাবজ্জীবন

যাবজ্জীবনসহ একাধিক মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মানিক মিয়া। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর মামলায় মানিক মিয়া (৩২) নামে এক শিক্ষককে যাবজ্জীবনসহ একাধিক মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১৯ মার্চ দুপুরে একমাত্র আসামির উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) আখতারুজ্জামান।

রায়ে ধর্ষণের দায়ে সংশ্লিষ্ট আইনে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ধর্ষণের ভিডিও ছড়ানোর দায়ে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সাজাপ্রাপ্ত মানিক সদর উপজেলার ডোবারচর দক্ষিণ পাড়ার মৃত হায়দার আলীর ছেলে ও স্থানীয় মডেল একাডেমির প্রধান শিক্ষক।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, ২০১৬ সালের ২১ অক্টোবর সদর উপজেলার ডোবার চর মডেল একাডেমির প্রধান শিক্ষক মানিক মিয়া অতিরিক্ত কোচিংয়ের কথা বলে ফুঁসলিয়ে একই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে (১৩) তার অফিস কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। সেইসাথে কৌশলে ধর্ষণের নগ্নছবি মোবাইলে ধারণ করে। ওই অবস্থায় ওই ছাত্রীকে একই কায়দায় আরও একাধিকবার ধর্ষণ করে মানিক মিয়া। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই ছাত্রী ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে পার্শ্ববর্তী কামারের চর পাবলিক স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হলে রেগে যান মানিক মিয়া। এক পর্যায়ে ওই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি পুনরায় তার স্কুলে ফিরে এসে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক বহাল রাখার প্রস্তাব দেয় ওই শিক্ষক। এতে সাড়া না পেয়ে ওই ছাত্রীকে হুমকি দেওয়া হয় এবং ধর্ষণের ভিডিও এলাকার বিভিন্নজনের মোবাইলে ছড়িয়ে দেয় মানিক মিয়া। ওই ঘটনায় একই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মানিক মিয়াসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার পরপরই গ্রেপ্তার হন মানিক মিয়া। পরবর্তীতে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেলেও পুলিশ রিপোর্ট আসার পর পুনরায় তাকে হাজতে যেতে হয়।

অন্যদিকে ওই মামলায় উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান ২০১৮ সালের ২১ মে তদন্ত শেষে একমাত্র আসামি মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারিক পর্যায়ে বাদী, ভুক্তভোগী, জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও তদন্তকর্মকর্তাসহ ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।