মোস্তফা মনজু
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
ময়মনসিংহ বিভাগের প্রথম ও একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (সিইসি) এবং ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের কমোনিকেশন ল্যাবে তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রকল্প প্রদর্শনী সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেশিন ল্যাবে অনুষ্ঠিত এই প্রদর্শনীতে দু’টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের তৈরি ছয়টি উদ্ভাবনী প্রকল্প স্থান পায়। প্রকল্পগুলো হলো- এসএফএমইউ রিভার্স ভেন্ডিং মেশিন (আরভিএম), ডিজিটাল ঘড়ি, লাইন ফলোয়ার উইথ অবস্টাকল এভয়ডিং রোবট, ইউম্যান ডিটেক্টশন অ্যান্ড সালাম, টোল সিস্টেম ও লিফ সেভার,
প্রদর্শনীতে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলো ঘুরে দেখেন এবং এই প্রকল্পগুলোকে আরো উন্নত আকারে বাস্তবায়ন ও ব্যবহার উপযোগী করে তোলার জন্য সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য প্রফেসর মো. আব্দুর রহমান সরকার। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. উবায়দুল্লাহ, ট্রেজারার প্রফেসর এ কে এম জাওয়াদুল হক, রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ গোলাম মওলা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. রইস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও প্রদর্শনীতে সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মো. মোশারফ হোসাইন, ইইই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মো. হাসানুজ্জামান এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রকল্পগুলোর সুপাইভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইইই বিভাগের প্রভাষক জনাব মো. নাফিউল হাসান। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলো বেশ যুগোপযোগী প্রযুক্তিনির্ভর। প্রকল্পগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
প্রকল্প : এসএফএমইউ রিভার্স ভেন্ডিং মেশিন (আরভিএম) :
এই প্রকল্প দলের নাম টিম মাস্কিটিয়ার। দলনেতা সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল আল মাহমুদের সাথে এই টিমে কাজ করেছেন খালিদ সাইফুল্লাহ শাওন, ইয়াসিন আজ মাইন ও মাসরুজ্জামান শুভা। দলনেতা ফয়সাল আল মাহমুদ জানান, এসএফএমইউ রিভার্স ভেন্ডিং মেশিন (আরভিএম) হলো একটি ইকো ফ্রেন্ডলি মেশিন যা ব্যবহৃত প্লাস্টিক এবং অ্যালুমিনিয়ামের বোতল সংগ্রহ ও রিসাইকেল করার মাধ্যমে রেওয়ার্ড প্রদানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই মেশিনটি যেভাবে কাজ করে তা তুলে ধরা হলো। বোতল জমা : ব্যবহারকারীরা মেশিনটির নির্দিষ্ট বোতামে চার দিয়ে প্লাস্টিক এবং ধাতব বোতল মেশিনে প্রবেশ করাবে। স্বয়ংক্রিয় সনাক্তকরণ : মেশিনে যতগুলো বোতল প্রবেশ করানো হবে মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বোতলের সংখ্যা শনাক্ত করে। কিউআর কোড তৈরি: বোতল প্রবেশ করানো শেষ হলে নির্দিষ্ট বোতামে চাপ দিলে একটি ইউনিক কিউআর কোড তৈরি করবে। যে কিউআর কোডে তাদের দেওয়া বোতলের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে পয়েন্ট অথবা টাকা যুক্ত করবে, যা ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট দোকান, রেস্তোরাঁ ও শপিং সেন্টারে ব্যবহার করতে পারবে। এই মেশিনটি প্লাস্টিক এবং ধাতব বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশ রক্ষায় সহায়তা করে। কিউআর কোডের মাধ্যমে রিওয়ার্ড প্রদান করে ব্যবহারকারীদেরকে রিসাইকেলিংয়ের প্রতি আকৃষ্ট করে। ভবিষ্যতে এই আরএমভি মেশিনটিকে আরো উন্নত করার পরিকল্পনা রয়েছে। টিমের সদস্যরা জানান, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ক্যামেরার মাধ্যমে আরও নিখুঁতভাবে প্লাস্টিক এবং ধাতব জাতীয় বোতল চিনতে পারা, ব্যবহারকারীদের জন্য মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হবে। যাতে করে একজন ব্যবহারকারী তার সর্বমোট জমা দেওয়া প্লাস্টিক এবং ধাতব জাতীয় বোতলের সংখ্যা ও প্রাপ্ত রিওয়ার্ড বিস্তারিত দেখতে পারেন। যুক্ত করা হবে মোবাইল ব্যাংকিং বিশেষ করে বিকাশ, নগদ, রকেটের মাধ্যমে রিওয়ার্ড টাকা উত্তোলন করার ব্যবস্থা থাকবে। সামগ্রিকভাবে এই আরভিএম একটি প্রযুক্তি যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং আরও টেকসই পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক হবে।
প্রকল্প : লিফ সেভার :
এই প্রকল্পটি তৈরি করেছেন সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এই প্রকল্পের টিমে রয়েছেন শিক্ষার্থী রকিবুল হাসান রনি, আমিনুল এহসান, রবিউল ইসলাম রাজন ও মো. মোখলেজ মিয়া। টিমের সদস্যরা জানান, লিফ সেভার প্রকল্পটি মূলত উন্নত সেচ পদ্ধতি। এর দ্বারা কৃষিতে জল দক্ষতা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি বৈপ্লবিক সমাধান হতে পারে। এই স্মার্ট সেচ ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক হলো মাইক্রোকন্ট্রোলার। মাটির আর্দ্রতা সেন্সর মাটির আর্দ্রতার মাত্রা মাপে। সেই তথ্য মাইক্রোকন্ট্রোলারে পাঠায়। সংগ্রহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মাইক্রোকন্ট্রোলার সেচের সময়সূচি নির্ধারণ করে এবং সেচের উপকরণ, যেমন স্প্রিংকলার বা ড্রিপ ইমিগেশন সিস্টেম, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। এই প্রকল্পটি বড় আকারে বাস্তবায়ন করা হলে অপচয় রোধ হবে। গাছপালাকে ঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে জল সরবরাহের ফলে ফলন বাড়বে। একই সঙ্গে এটিতে স্বয়ংক্রিয় সেচ ব্যবস্থার কারণে কম শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। এই প্রকল্পটি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে টিমের সদস্যরা জানান, টেকসই এবং সাশ্রয়ী মূল্যের প্রযুক্তি উন্নয়ন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং সমন্বয়, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) অন্তর্ভুক্তকরণ, (আইওটি) ব্যবহার করে একাধিক ক্ষেত্রে এই সেচ ব্যবস্থাগুলোর সংযোগ স্থাপন করা যেতে পারে। এটি কৃষকদের দূর থেকেই তাদের জমি এবং ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দেবে। বাংলাদেশে উন্নত স্বয়ংক্রিয় সেচ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হলেও, এটি অসম্ভব নয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হলে এই প্রযুক্তিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা সম্ভব। কৃষকদের এই প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং এর সুবিধা ও ব্যবহার সম্পর্কে তাদের সচেতন করা। স্থানীয়ভাবে উপযোগী উন্নত সেচ ব্যবস্থা তৈরির জন্য গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ করা। বাংলাদেশের আবহাওয়া, মাটির ধরন এবং ফসলের চাহিদার জন্য উপযোগী উন্নত সেচ ব্যবস্থা তৈরির জন্য গবেষণা করা। ইত্যাদি বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র এবং সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রচারণা চালানো দরকার।
প্রকল্প : লাইন ফলোয়ার উইথ অবস্টাকল এভয়ডিং রোবট :
এটি টিম জেইএস এর উদ্ভাবনী। এই দলে রয়েছেন সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী জিল্লুর রহমান, আবু বকর সিদ্দিক ও ইলিয়াস হোসাইন। টিমের সদস্যরা জানান, লাইন ফলোয়ার উইথ অবস্টাকল এভয়ডিং রোবটের কাজ মানুষের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই ধরনের রোবট বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় এবং মানুষের দৈনন্দিন কাজকে সহজ, নিরাপদ এবং কার্যকর করে তুলতে পারে। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো: ১. স্বয়ংক্রিয় পরিবহন ব্যবস্থা: লাইন ফলোয়ার রোবটগুলি নির্দিষ্ট রুট ধরে বিভিন্ন সামগ্রী পরিবহন করতে পারে। এটি কারখানা, গুদাম, বা বড় শপিং মলে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যা নির্দিষ্ট লাইন ধরে পণ্য পরিবহন করে। এতে সময় বাঁচে এবং মানব শ্রম কম লাগে। অটোমেটেড গাইডেড ভেহিকল : এর সিস্টেমগুলো প্রায়ই গুদাম বা উৎপাদন পরিবেশে ব্যবহৃত হয় যেখানে রোবটগুলো লাইন ফলো করে নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে পয়েন্টে মালামাল সরিয়ে নেয়। এর সাথে বাঁধা এড়ানোর ক্ষমতা যুক্ত করলে রোবটগুলো আরও কার্যকরভাবে এবং নিরাপদে কাজ করতে পারে। স্বয়ংক্রিয় ক্লিনিং রোবট : রোবোটিক ভ্যাকুয়াম ক্লিনার এবং অন্যান্য ক্লিনিং রোবটগুলি বাড়ির বা অফিসের মেঝে পরিষ্কার করতে লাইন ফলো এবং বাধা এড়ানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এগুলো নির্দিষ্ট এলাকা পরিষ্কার করতে পারে এবং চলার পথে কোনো বাঁধা এলে তা শনাক্ত করে এড়িয়ে চলে। স্বয়ংক্রিয় রিটেইল ওয়্যারহাউস ম্যানেজমেন্ট : অনলাইন রিটেইল জায়ান্ট যেমন আমাজন, তাদের ওয়্যারহাউসে পণ্য সরবরাহ এবং সঠিক স্থানে পণ্য পৌঁছাতে লাইন ফলোয়ার এবং বাঁধা এড়ানোর রোবট ব্যবহার করে। এটি পণ্যের পরিচালনা আরও দ্রুত এবং কার্যকর করে তোলে। স্বয়ংক্রিয় ডেলিভারি রোবট: লাইনে ফলো এবং বাধা এড়ানোর ক্ষমতা সম্পন্ন রোবটগুলো শহরের মধ্যে ছোটখাটো ডেলিভারি করতে পারে, যেমন খাবার, ওষুধ বা অন্যান্য পণ্য। এটি মানুষের সময় বাঁচাতে এবং ডেলিভারি প্রক্রিয়াকে আরও নির্ভরযোগ্য করতে পারে। স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যবহার: হাসপাতালে রোগীদের ওষুধ, খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করতে এই রোবটগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি হাসপাতালের স্টাফদের উপর চাপ কমাতে এবং সঠিক সময়ে সঠিক জিনিস সরবরাহ করতে সহায়তা করে। শিক্ষা খাতে ব্যবহার : শিক্ষার্থীরা রোবোটিক্স এবং প্রোগ্রামিং শেখার জন্য লাইন ফলোয়ার এবং বাধা এড়ানোর রোবট প্রজেক্ট তৈরি করতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে প্রযুক্তি শেখার সুযোগ দেয়। একথায় বলা যায় লাইন ফলোয়ার এবং বাঁধা এড়ানোর রোবটগুলো বিভিন্ন কাজে মানুষের জীবনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে, যেমন: সময় ও শ্রম সাশ্রয়। কাজের নির্ভুলতা বৃদ্ধি। নিরাপত্তা বৃদ্ধি। খরচ কমানো। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। এই ধরনের রোবট প্রযুক্তি উন্নত করে মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ এবং কার্যকর করে তোলা সম্ভব।
প্রকল্প : ইউম্যান ডিটেক্টশন অ্যান্ড সালাম :
এই প্রকল্পটি তৈরি করেছেন ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. এইচ আর শান্ত, জীবনচন্দ্র সরকার ও আব্দুল্লাহ আল নিশাত। শিক্ষার্থী মো. এইচ আর শান্ত বলেন, আমাদের এই প্রজেক্টটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। আমাদের তৈরি করা এই প্রযুক্তি মানুষকে বোধ করতে সক্ষম এবং সেই সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অভ্যর্থনা প্রকাশ করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তিটি যেকোনো অনুষ্ঠান, সমাবেশ কিংবা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ দারে স্থাপনের মাধমে মানুষদেরকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অভ্যর্থনা জানাতে ব্যবহার করা যাবে। দিন দিন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় রোবটের ব্যবহার যেভাবে বেড়ে চলেছে, সেই দিক বিবেচনা করে আমরা তৈরি করেছি এই প্রকল্পটি। আশা করছি যে, পৃথিবীকে আরো আধুনিকায়নে আমাদের এই প্রযুক্তিটি যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
প্রকল্প : টোল সিস্টেম :
এই প্রকল্পটির দলের নাম ‘দ্যা ইনোভেটর্স’। এই দলে রয়েছেন সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈমা জাহান চৌধুরী, সুমাইয়া ফারুকী, মুহাই মিনুম মুয়্যিদি তানহা, সাবিকুন জান্নাত দিশা ও আরিয়ানা ইসলাম জেরিন। শিক্ষার্থী নাঈমা জাহান চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি তৈরি করতে আমাদের একটি আরডুইনো, একটি সার্ভো মোটর, দুটি ইফ সেন্সর, একটি ব্রেডবোর্ড এবং জাম্পার তার প্রয়োজন। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো টোল গেটের সামনে কোনো যানবাহন থামলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল গেট খুলে দেওয়া এবং বন্ধ করা। তারপর প্রথম আইআর সেন্সর গাড়িটিকে নিশ্চিত করবে এবং গেটটি সার্ভো মোটর দ্বারা খোলা হবে। একইভাবে গাড়িটি যখন গেট অতিক্রম করে তখন দ্বিতীয় সেন্সর গাড়িটিকে নিশ্চিত করবে এবং গেটটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। জামালপুরে রাস্তা বা সেতু বানানোর সময় পুরাতন পদ্ধতি বাদ দিয়ে নতুন এই ডিজিটালাইজড টোল পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশে নতুন নতুন সেতু তৈরি হচ্ছে, সেখানেও এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে ডিজিটালাইজড করার দিকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি যদি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা যায়।
প্রকল্প : ডিজিটাল ঘড়ি :
এই প্রকল্প দলের সদস্যরা হলেন ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার ইসলাম তানহা, আহসান সাইদ সাদ, রহিম ইসলাম, সহরাদ খন্দকার, তৌহিদুল ইসলাম, নাইম ইসলামস ও নাফিউর রহমান। এই ছয়জনের প্রচেষ্টার বিনিময়ে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হন তারা। দলনেতা মো. শাহরিয়ার ইসলাম তানহা জানান, ডিজিটাল ঘড়িটি একটি সংখ্যাসূচক বিন্যাসে সময় প্রদর্শন করে। এগুলো একটি ব্যাটারিচালিত হয় এবং সাধারণত অ্যালার্ম, টাইমার এবং স্টপওয়াচের মতো বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অফার করে। এনালগ ঘড়ি শত শত বছর ধরে চলে আসছে। কিন্তু প্রথম পুনরাবৃত্তির ডিজিটাল ঘড়িটি ১৯ শতকের শেষের দিকে উদ্ভাবিত হয়নি। ১৮৮৩ সালে, জোসেফ প্যালওয়েবার, একজন অস্ট্রিয়ান প্রকৌশলী, তার ‘জাম্প আওয়ার’ পদ্ধতিতে আবিষ্কার করেছিলেন প্রথম ডিজিটাল পকেট ঘড়ি। এই প্রকল্পে ডিজিটাল ইলেকট্রনিকস কোর্সের আওতাধীন বিভিন্ন বেসিক এবং মৌলিক ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে করে জুনিয়র শিক্ষার্থীরা এগুলো দেখে শিখতে এবং অনুপ্রাণিত হতে পারে। ডিভাইসগুলোর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সফল হন তারা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে টিমের সবাই খুবই আনন্দিত। ভবিষ্যতে এরকম আরো অসংখ্য প্রজেক্ট তুলে ধরার আগ্রহ রয়েছে তাদের। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে আমরা একটি স্বয়ংক্রিয় রোবট বানানোর পরিকল্পনা করেছি যেটি নিজে নিজেই চলতে পারবে এবং সামনে কোনো বাঁধা পেলে নিজে নিজেই সেই বাধা শনাক্ত করবে। এরপর সেটি অন্যদিকে নিরাপদ স্থানের দিকে যেতে থাকবে।