ইউক্রেনের গুচ্ছ যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারের যথাযথ জবাব দেবে রাশিয়া : কূটনীতিক

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর গুচ্ছ অস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহারের সমুচিত জবাব দেবে রাশিয়া।

১৩ জুলাই ইন্টারন্যাশনাল লাইফ জার্নালের প্রশ্নের জবাবে জাখারোভা মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বলেছেন, ‘গুচ্ছ যুদ্ধাস্ত্র বেসামরিক জনগণের জন্য বিপদ ডেকে আনার ব্যপারে রাশিয়া সচেতন। সে কারণেই বিশেষ সামরিক অভিযানকালে এ গুলো কখনই ব্যবহার করেনি। তবে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী যদি এই ধরনের যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে [রাশিয়া] আনুপাতিক প্রতিক্রিয়া দিতে বাধ্য হবে।’ খবর বার্তা সংস্থা তাস’র।

জাখারোভা গত সপ্তাহের শেষের দিকে কিয়েভ সরকারকে গুচ্ছ অস্ত্র সরবরাহের মার্কিন সিদ্ধান্তের কথা সমরণ করে বলেন, এ সিদ্ধান্ত সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হতবাক করেছে। তিনি আরো বলেন, ইউক্রেনে গুচ্ছ বোমা ব্যবহার অগ্রহণযোগ্য বলে পশ্চিমা দেশগুলোসহ অনেক দেশ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছে।

কূটনীতিক বলেন, স্প্যানিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্গারিটা রবেলস, ৮ জুলাই কিয়েভের জন্য ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের ইস্যুকে উল্লেখ করে বলেছেন ‘কোন অবস্থাতেই নির্দিষ্ট ওই সকল অস্ত্র সরবরাহ করা উচিত নয়।’

জাখারোভা বলেন, একই দিনে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, তার দেশ গুচ্ছ বোমা ইস্যুতে ২০০৮ সালের সার্বজনীন কনভেনশনের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করবে। ১০ জুলাই লন্ডনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনার সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক পুনরায় নিশ্চিত করেন, গ্রেট ব্রিটেন কনভেনশনের অধীনে তার নীতি মেনে চলে। নীতিমালায় এসব অস্ত্রের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

জাখারোভা বলেন, মার্কিন প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে দেশীয় মার্কিন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিন্দা জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘৮ জুলাই, ১৯ জন মার্কিন কংগ্রেসম্যান প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানবাধিকার সংরক্ষণে হোয়াইট হাউসের নেতৃস্থানীয় অবস্থান ধরে রাখতে বেসামরিক জনগণের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে এমন ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র হস্তান্তর না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।’ তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, ১২৩টি দেশ ২০০৮ সালের ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের কনভেনশনে এই ধরনের অস্ত্র নিষিদ্ধের ব্যপারে স্বাক্ষর করেছে।

জাখারোভা বলেন, ভিয়েতনামে মার্কিন যুদ্ধের ৫০ বছর পরেও, এখনও সে দেশে অবিস্ফোরিত ক্লাস্টার বোমার আঘাতে বেসামরিক মানুষ পঙ্গু বা নিহত হওয়ার মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটছে।

কূটনীতিক বলেন, ‘ইউক্রেনীয় নব্য-নাৎসিদের কাছে ক্লাস্টার বোমা সরবরাহ করার ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্ত রাশিয়ার সর্বাধিক কৌশলগত ক্ষতি সাধনের আকাঙ্ক্ষা থেকে উদ্ভূত। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করেছে ইউক্রেনর সাধারণ যুদ্ধাস্ত্রের মজুদ ফুরিয়ে আসছে, তাই এখন অমানবিক ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। আমেরিকানরা তাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের ফলে নিহত বেসামরিক নাগরিকদের নিয়ে কোন উদ্বেগ প্রকাশ করছে না। আক্ষরিক অর্থে ‘শেষ ইউক্রেনীয় পর্যন্ত রাশিয়ার সাথে লড়াই করতে তাদের প্রস্তুত করছে।’