নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তান

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ তৃতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো পাকিস্তান।

অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে ৯ নভেম্বর পাকিস্তান ৭ উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মত সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। এর আগে ২০০৭ ও ২০০৯ সালের আসরে ফাইনাল খেলেছিলো পাকিস্তান। অন্য দিকে তৃতীয়বারের মত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলো নিউজিল্যান্ড। এর আগে ২০০৭ ও ২০১৬ সালে সেমিতে বিশ্বকাপ শেষ করেছিলো কিউইরা।

ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। বাউন্ডারি দিয়ে ইনিংস শুরু করলেও তৃতীয় বলে পাকিস্তানের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে লেগ বিফোর আউট হন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার ফিন অ্যালেন।

শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে পাওয়ার-প্লের শেষ বলে বিদায় নেন আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে। ২০ বলে ২১ রান করে রান আউট হন তিনি।

তিন নম্বরে নেমে এ ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি চলমান আসরে সেঞ্চুরি করা গ্লেন ফিলিপস। পাকিস্তানের স্পিনার মোহাম্মদ নাওয়াজকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৬ রানে থামেন ফিলিপস। এতে ৮ ওভারে ৪৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে মহাচাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড।

দলকে চাপমুক্ত করতে বড় জুটিতে মনোযোগ দেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেল। রান গতি বাড়াতে পাকিস্তানের বোলারদের উপর চড়াও হন তারা। ১৫তম ওভারে ১শতে পা রাখে নিউজিল্যান্ড। ১৭তম ওভারে উইলিয়ামসনকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন আফ্রিদি। আউট হওয়ার আগে ১টি করে চার-ছক্কায় ৪২ বল খেলে ৪৬ রান করেন উইলিয়ামসন। চতুর্থ উইকেটে মিচেলের সাথে ৫০ বলে ৬৮ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক।

মারমুখী মেজাজে থাকা মিচেল ১৯তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। ৩২ বলে অর্ধশতক করা মিচেল ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলে নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে ১৫২ রানের লড়াকু পুঁিজ এনে দেন। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৫ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেন মিচেল। ১২ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন জেমস নিশাম। পাকিস্তানের আফ্রিদি ২৪ রানে ২টি ও নাওয়াজ ১২ রানে ১ উইকেট নেন।

১৫৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাকিস্তানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও অধিনায়ক বাবর আজম। ১২ দশমিক ৪ ওভারে ১০৫ রান তুলেন তারা। অবশ্য ট্রেন্ট বোল্টের করা ইনিংসের চতুর্থ বলেই বাবরের ক্যাচ ফেলেন কনওয়ে।

পাওয়ার-প্লেতে ৫৫ রান তুলে নেন রিজওয়ান-বাবর। শূন্যতে জীবন পেয়ে ১১তম ওভারে টি-টোয়েন্টিতে ৩০তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন বাবর। এজন্য ৩৮ বল খেলেন তিনি। ১২তম ওভারে জুটিতে সেঞ্চুরি করেন বাবর-রিজওয়ান। এই নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড নবমবারের মত জুটিতে সেঞ্চুরি করলেন তারা। সবগুলোই উদ্বোধনী জুটিতে।

১৩তম ওভারে ৩২ বলে সাত বাউন্ডারিতে ৫৩ রান করা বাবরকে শিকার করে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন বোল্ট।

১৪তম ওভারে ৩৬ বল খেলে টি-টোয়েন্টিতে ২৩তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান রিজওয়ান। ৪৩ বলে পাঁচ বাউন্ডারিতে ৫৭ রান করা রিজওয়ানও শিকার হন বোল্টের।

এরপর জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে আউট হন মোহাম্মদ হারিস । তবে আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩০ রান করেন হারিস। ইনিংস সাজান দু ইবাউনডারি ও এক ওভার বাউন্ডারিতে। ৫ বল বাকী রেখে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন শান মাসুদ ও ইফতেখার আহমেদ। মাসুদ ৩ ও ইফতেখার শূন্যতে অপরাজিত থাকেন। নিউজিল্যান্ডের বোল্ট ২টি ও স্যান্টনার ১টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন রিজওয়ান।

আগামী ১৩ নভেম্বর মেলবোর্নে বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। কাল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের জয়ী দলের সাথে শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচ খেলতে নামবে পাকিস্তান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর কার্ড : (টস-নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ড : ১৫২/৪, ২০ ওভার (মিচেল ৫৩*, উইলিয়ামসন ৪৬, আফ্রিদি ২/২৪)।
পাকিস্তান : ১৫৩/৩, ১৯.১ ওভার (রিজওয়ান ৫৭, বাবর ৫৩, বোল্ট ২/৩৩)।
ফল : পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মোহাম্মদ রিজওয়ান (পাকিস্তান)।