অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বললেন, ব্র্যাকের কর্মসূচি দারিদ্র্য নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে

অতিদরিদ্র কর্মসূচির সদস্যের বাড়ি পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: ১৭ অক্টোবর-আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস উপলক্ষে বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অক্টোবর মাসব্যাপী নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২৫ অক্টোবর জামালপুর জেলায় ব্র্যাকের আলট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু। তিনি ব্র্যাকের উল্লেখিত কর্মসূচির অংশগ্রহণকারীদের বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এসময় তাঁর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাজু আহমেদ ও জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলে এলাহী মাকাম।

ব্র্যাকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক জামালপুর জেলা সমন্বয়ক মো. মুনীর হুসাইন খান, বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (এএসসি) রিপন চন্দ্র মন্ডল, ইউপিজি জোনাল ম্যানেজার মো. সোলায়মান, ইউপিজি আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. আনারুল ইসলাম ও আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মৌসুমী।

দেশজুড়ে অতিদারিদ্র্য নিরসনে ব্র্যাকের ভূমিকার প্রশংসা করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বলেন, ‘ ব্র্যাকের আল্ট্রা-পুওর গ্রাজুয়েশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে অতি দরিদ্র মানুষ যে সম্পদ পাচ্ছে এবং তার যথাযথ ব্যবস্থাপনা, সরকারি বিভিন্ন সেফটিনেট কর্মসূচিতে তাদের অন্তরভুক্তিকরণ, সরকারি স্বাস্থ্য সেবা পেতে পরামর্শ প্রদান অত্যন্ত ভাল একটি কর্মসূচি। যা সরকারের এসডিজি বাস্তবায়নে (দারিদ্র বিমোচন, জীবনমান উন্নয়ন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তাদের ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারলে আরও ভাল হবে। আমি ব্র্যাকের একর্মসূচির সাফল্য কামনা করি।’

জাতিসংঘ এ বছরের আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘সর্বক্ষেত্রে সবার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখি’। মানুষের মর্যাদা কেবল একটি একক মৌলিক অধিকার নয, বরং এটি অন্যান্য সকল মৌলিক অধিকারের ভিত্তি’। দিবসটিকে কেন্দ্র করে ব্র্যাকের আলট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রাম জামালপুর জেলাসহ বর্তমানে কর্মসূচিটি চলমান রয়েছে এরকম সকল জেলার (৩৭টি) জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাঠকার্যক্রম পরিদর্শন আয়োজন করেছে।

ব্র্যাকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের এই উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে, সরকারের মাঠপর্যায়ে তথা জেলা প্রশাসকের আলট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রাম বিষয়ে সম্যক ধারণা দেওয়া এবং জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের কাছে কর্মসূচিটির অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান তুলে ধরা। যা ভবিষ্যতে সরকারের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরিবেশ তৈরিতে অবদান রাখবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে অতিদারিদ্র্য দূরীকরণে আলট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রাম কীভাবে অবদান রাখতে পারে, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসক এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ গ্রহণ করা, যা ব্র্যাকের ভবিষ্যত করণীয় নির্ধারণে সহায়ক হবে ।

উল্লেখ্য যে, জামালপুর জেলায় ২০১০ খ্রিস্টাব্দে আলট্রা-পুওর গ্র্যজয়েশন প্রোগ্রামের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলাটির ৩৩ হাজার ৬৩৮টি অতিদরিদ্র পরিবার ব্র্যাকের আলট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামের আওতায় এসেছে। ২০২২ খ্রিস্টাব্দে জামালপুর জেলায় এই কর্মসূচিটিতে অংশ নিচ্ছে ৬ টি উপজেলার ২৩৪৮ টি অতিদরিদ্র পরিবার। ২০০২ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৪৮টি জেলার ২১ লাখর বেশি অতিদরিদ্র পরিবার আলট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামের আওতায় এসেছেন যাদের ৯৫% কর্মসূচি শেষ হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘমেয়াদেও তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।