এবার শেরপুরেও তৈরি হলো আস্ত পদ্মা সেতু!

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: এবার শেরপুরেও তৈরি হলো আস্ত পদ্মা সেতু! কথাটি শুনে খটকা লাগলেও জেলা শহরের বাগবাড়ি এলাকায় শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যরা মন্দিরের পাশে পুকুরের উপর কর্কশীট দিয়ে ওই স্বপ্নের সেতু নির্মাণ করেছেন। এটি দেখতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজারো দর্শণার্থী প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন। আয়োজকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের গর্বের সেতু তৈরি করে দিয়েছেন। কিন্তু এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে তা স্বচক্ষে দেখা সম্ভব না। তাই ওই সেতু ডেমো আকারে তৈরি করে সবাইকে এর দৃষ্টি নন্দন অবয়ব দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।

সেতু নির্মাণকারী সঞ্জিত সূত্রধর বলেন, ইউটিউব দেখে পদ্মা সেতুর পুরো ডিজাইনটা আত্মস্থ করি। পরে কর্কশীট দিয়ে সেতুর নাট-বল্টু তৈরি করার চেষ্টা করি। এটি হয়ে যাওয়ার পর ১শ’ ফুট লম্বা এবং পাশে সাড়ে তিন ফুট চওড়া রেখে পুরো সেতুটি নির্মাণ করা হয়। আর এ সেতুটি তৈরি করতে প্রায় ২০-২২ দিন সময় লাগে।

সঞ্জিতের স্ত্রী মামনি সূত্রধর বলেন, এবারের পুজোয় আকর্ষণীয় বিষয় কী হবে এ বিষয়ে জানতে চায় আমার স্বামী। তখন আমি তাকে বলি প্রধানমন্ত্রী আমাদের পদ্মা সেতু উপহার দিয়েছেন। তাই তুমিও এবার পদ্মা সেতু বানাও। তখন আমার স্বামী বলে এটি অনেক বড় ব্যাপার একাজ আমাকে দিয়ে হবেনা। পরে তার মনে সাহস যুগিয়ে অনেক চেষ্টার পর এ কাজে আমরা সফল হই।

বাগবাড়ি মন্দির কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুজিত দাস বলেন, দেশের জন্য দৃষ্টি নন্দন জিনিস হচ্ছে পদ্মা সেতু। এ কারণে কমিটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আমরা এবার ওই সেতু তৈরি করবো। পরে সঞ্জিতকে সেতুটি তৈরি করার চুক্তি দেওয়া হয়।

সুজিত দাস আরও বলেন, পদ্মা সেতু দেশের মানুষের জন্য আর্শীবাদ স্বরুপ। এর ফলে কোটি কোটি মানুষের সুবিধা হয়েছে। আর এই স্বপ্নের সেতু ওই জায়গায় গিয়ে সবার জন্য দেখা সম্ভাবনা। তাই এর আদলে সবাইকে সেতুটি দেখার জন্য এই প্রয়াস। আশা করছি জেলায় এ নিয়ে কোন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলে পদ্মা সেতুর জন্য আমরা প্রথম স্থান লাভ করবো।

দর্শনার্থী সুনীল দাস বলেন, ফেসবুকে এই পদ্মা সেতুর ছবি পোস্ট হওয়ার পর তা ভাইরাল হয়ে গেছে। তাই আমি এ সেতু দেখতে আসছি। আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।

দর্শনার্থী মনিষা দাস বলেন, আমি এ খবর পেয়ে গাইবান্ধা থেকে শেরপুর এসেছি। শুধু আমি একা নই আমার জানা মতে আশপাশের জেলা থেকে হাজারো মানুষ আসছে এই পদ্মা সেতু দেখার জন্য।

বাগবাড়ি মন্দির কমিটির কোষাধ্যক্ষ সবুজ দে বলেন, এই সেতু তৈরি করতে ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রায় ১৫ জন লোক দিন রাত এক করে এই সেতু নির্মাণ করেছেন।

কমিটির উপদেষ্টা নির্মল দে আগামীতে আরও ভাল কিছু উপহার দেওয়ার জন্য স্থানীয় এমপি এবং মেয়রের সহযোগীতা কামনা করেছেন।