শেরপুরের একটি কলেজকে ৫২ হাজার টাকা আয় করে দিল মৌমাছির দল!

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: এবার শেরপুরের একটি বেসরকারি কলেজে আয় ফান্ডে ৫২ হাজার টাকা যোগ করেছে মৌমাছির দল। বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য। জেলার নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ডিগ্রি কলেজের চারতলা ভবনের চারপাশের কার্ণিশ জুড়ে ৭৫টি মৌচাক হয়েছে। মধু ব্যবসায়ীদের কাছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ওইসব মৌচাক বিক্রির মাধ্যমে এ আয় করে।

স্থানীয় আব্বাস মিয়া, সরফউদ্দীন, হোসেন আলীসহ অনেকেই জানায়, নকলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন সরিষা আবাদের জন্য বিখ্যাত। এ কারণে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মৌমাছি দল বেঁধে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহের জন্য এ এলাকায় চলে আসে। এ অবস্থায় তারা তাদের সংগৃহীত মধু চাক আকারে বিভিন্ন বাড়ির বাইরের দেওয়াল, সানসেট, স্কুল ও কলেজ ভবনের সুবিধাজনক জায়গায় মজুদ করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী চাক হয়েছে চন্দ্রকোনা কলেজের চারতলা ভবনের চারপাশের কার্ণিশে। এছাড়া আশপাশের অন্যান্য বাড়ি ঘরে অন্তত ৩০-৪০টি করে মৌচাক দেখা যায়।

চন্দ্রকোনা কলেজ সূত্র জানায়, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজের চারতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৮ সালে। নতুন এ ভবন নির্মাণ হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর শীতের শুরুতে মৌমাছিরা মৌচাক করে আসছিল এ কলেজ ভবনে। মৌসুম শেষে আবার অন্যত্র চলে যেত মৌমাছিরা। প্রথম দিকে মৌচাকের সংখ্যা কম থাকলেও এবার এ কলেজে মৌচাকের সংখ্যা ৭৫ এ দাঁড়িয়েছে।

চন্দ্রকোনা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর আমাদের বিল্ডিং ভবনের মৌচাক থেকে সংগৃহীত মধু আমরা শিক্ষক কর্মচারীরা ভাগ করে নিতাম। এবারই প্রথম ওইসব মৌচাক বিক্রি করে ৫২ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এ টাকা কলেজের রাজস্ব খাতে যোগ হবে।

রফিকুল ইসলাম জানান, এই কলেজ ক্যাম্পাস এখন মৌমাছির নিরাপদ আশ্রয়স্থল। কলেজের ভবনজুড়ে একের পর এক মৌচাকে ভরে যাচ্ছে। কলেজের ছাত্র-শিক্ষকরা যেমন মৌমাছিকে বিরক্ত করে না। তেমনি মৌমাছিও কাউকে কামড় দেয়না।

মধু সংগ্রহকারি ব্যবসায়ী মিজান, আব্দুল খালেক ও রতন মিয়া বলেন, চন্দ্রকোনা ডিগ্রি কলেজ থেকে যে পরিমাণ মধু তারা সংগ্রহ করবেন তা বাজারে বিক্রি করে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারবেন। এছাড়া অন্যান্য এলাকার বাসা বাড়িতে তৈরি হওয়া প্রায় সহ¯্রাধিক মৌচাক তারা চুক্তি মোতাবেক কিনে নিয়েছেন। সেখান থেকেও তারা কাঙ্ক্ষিত আয় করতে পারবেন বলেও তারা জানান।

চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গেন্দু বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মধ্যে চন্দ্রকোনা এলাকা সরিষা উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এ কারণে এ এলাকায় ব্যাপক পরিমাণে মৌচাকের দেখা পাওয়া যায়। মৌমাছিরা দল বেঁধে বিভিন্ন বাসা বাড়ি, স্কুল কলেজে মৌচাক তৈরি করে। এর সৌন্দর্য দেখার জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন ছাড়াও অন্য জেলার মানুষজনও এখানে ভিড় করে।