মাদক ও রাজাকার সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে শেরপুরে সাবেক দুই ছাত্রলীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন

মাদক ও রাজাকার সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে শেরপুরে সাবেক দুই ছাত্রলীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম : মাদক ও রাজাকার সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে শেরপুরে দুই ছাত্রলীগ নেতা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অজয় চক্রবর্তী জয় ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন আহম্মদ।

২ ডিসেম্বর বিকালে শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এর আগে ১ ডিসেম্বর ঢাকা টাইম’স টুয়েন্টিফোরসহ আরো বেশ কয়েকটি অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় ‘রাজাকারপুত্র যখন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে মনির উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ওই খবরে আমার বাবাকে রাজাকার বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অথচ আমার বাবা সম্পর্কে সকল সত্য ঘটনা জানেন জেলার সুধীজন। কর্মজীবনে আমার বাবা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। এছাড়াও তিনি তৎকালীন সময়ে শেরপুর পৌরসভায় ইন্সপেক্টর পদে সুনামের সাথে চাকরি করেছেন।

মনির উদ্দিন আহম্মদ আরো বলেন, ওই সংবাদে আমার বাবাকে রাজাকার প্রমাণ করার জন্য জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কামান্ডারের একটি প্রত্যয়নপত্রের বরাত দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে কামান্ডার সাহেবের সাথে যোগাযোগ করা হলে ওই প্রত্যয়নপত্রটি ভুয়া বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেখানে তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

মনির দাবি করেন, ১৯৯০ সালে এসএসসি পাশ করে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় হন। সে সময় কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পান। একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন। এরপর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান।

প্রকাশিত খবরটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মনির বলেন, ওই বিষয়ে তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

অন্যদিকে অজয় চক্রবর্তী জয় বলেন, বর্তমানে মাদকের ভয়াবহ ছোবল গ্রাস করছে উঠতি বয়সী তরুণ ও যুবকদের। আমি এবং আমার দল সবসময় মাদকের বিরুদ্ধে। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সভা সমাবেশ করেছি। আমার বিরুদ্ধে ঢাকা টাইমসহ বিভিন্ন অনলাইন ও বেশ কিছু প্রিন্ট পত্রিকায় যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা দুঃখজনক।

অজয় চক্রবর্তী জয় জানান, প্রকাশিত খবরে তাকে মাদক সেবনকারী ও বিক্রেতা বলা হয়েছে। যা মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।

প্র্রকাশিত খবরের বিষয়ে তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

এ দিন প্রত্যয়নপত্রের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরো’র সাথে।

তিনি বলেন, প্রত্যয়নপত্রটি সম্পূর্ণ জাল। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যে সাংবাদিক এই মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে তার ও তার মিডিয়ার বিরুদ্ধে আমি মানহানি ও ক্ষতিপূরণের মামলা করবো।

এছাড়া যারা এই জাল প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করে তার নাম ব্যবহার করেছে তাদের বিরুদ্ধেও তিনি মামলা দায়ের করবেন বলে জানান।

এ দিন সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আরিফুল ইসলাম অপু, ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তারিফ তৌফিকুর রহমান, শ্রীবরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেরাজউদ্দিন চৌধুরী, আরাফাত হোসেন সনেট, তনয় ঘোষ, মাহমুদুল হাসান সুজন প্রমুখ।