বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্ন ছিলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিলো তাঁর বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যতামুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর পরই তিনি একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন।

তিনি বলেন, শারদীয়া দুর্গোৎসব বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসব। দুর্গাপুজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি আজ সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। সমাজে অন্যায়, অবিচার, অশুভ ও অসুর শক্তি দমনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আবহমানকাল ধরে হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানা উপাচার ও অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে।

৩০ মার্চ সন্ধ্যায় ৪৩৩ বার্চ মাউন্ট রোড এর টরন্টো দুর্গাবাড়ী’র যুগপূর্তি উৎসব উপলক্ষে ‘প্রবাসে শারদীয় দুর্গোৎসব-২০২১’ শিরোনামে এক মত বিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

পুজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হীরা লাল পাল (পিএইচডি) এসময় প্রতিমন্ত্রীকে পুজামন্ডব ঘুরে দেখান। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলার মাটিতে সাম্প্রদায়িকতার বীজ যাতে বপন না হতে পারে এ বিষয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরই জাতির পিতা বারবার সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা সবসময় চাইতেন বাংলাদেশ হবে ধর্ম নিরপেক্ষ একটি দেশ। যেখানে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাঁর ধর্ম-কর্ম পালন করতে পারবেন। কেউ কারও ধর্মীয় আচার পালনে বাধা দিতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু’র সেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যেই জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরাধিকার তাঁর কন্যা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ অতীতের অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে অন্যান্য ধর্মালম্বীরা বাংলাদেশে ভাল অবস্থানে আছেন।

তিনি বলেন, আমাদের বাঙালি চেতনায় প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার সাথে সামাজিকতায় অনন্য। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার শেষে আমরা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সামাজিক আনুষ্ঠানিকতায় একে-অপরের সাথে ভ্রাতৃত্বে মিলিত হই। আমাদের বাঙালিদের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে পৃথিবীর যেখানেই যাই না কেন, নিজের আনন্দ অনুভূতি প্রকাশে সবার আগে আরেকজন বাঙালি খুঁজে নিই কিংবা নেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্যে মিশে আছে অসাম্প্রদায়িকতার সুন্দর এক মানবিক অনুভূতি। আর তাইতো দেশের বাইরে পূজা কিংবা ঈদে জাতি-ধর্ম সবকিছুর ঊর্ধ্বে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই বসে বাঙালিদের মিলনমেলা। যেখানে প্রতিটি অনুষ্ঠানে বাঙালিয়ানার কোন কমতি থাকে না কখনোই।

এর আগে বিকেল ৪টায় রেইসন ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিতব্য ‘ডিজিটাল কমিউনিকেশন এন্ড মাস মিডিয়া’ শীর্ষক বৈঠকে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে সমহারে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এবং সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। পরিবর্তনশীল বিশ্ব ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি আজ বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই ডিজিটাল বাংলাদেশ।

ডা. মুরাদ বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ ডিজিটাল ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনের দ্বারা খুব দ্রুততার সাথে অল্প সময়ে আমরা বিশ্বের যেকোন প্রান্তে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনী সম্পর্কে জানতে পারছি এবং আমাদের দেশেও তা ব্যবহার করে এগিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ ও ব্যবহার করে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ক্ষুধা-দারিদ্র্যতা মুক্ত বঙ্গবন্ধ’র স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।