শেরপুরে ৪০ জন হিজড়া পেলো প্রধানমন্ত্রীর উপহার

রান্নারসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের পাঁচ উপজেলায় বসবাসকারি ৪০ জন হিজড়া (তৃতীয় লিঙ্গ) প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি উপহার পেয়েছে। ৭ জুন বিকালে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের কবিরপুর মৌজার আন্ধারিয়া সুতিরপাড় এলাকায় ২০০ শতাংশ জমির ওপর গড়ে তোলা ওইসব বাড়ি হস্থান্তর করেন জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহায়তায় এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়া ওই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’।

সদর উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য মতে, ২০০ শতাংশ জমিতে ৬৯ লাখ ৪ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। এই আবাসন প্রকল্পে বসবাসকারি ৪০ জন হিজড়ার আয় বর্ধনমূলক কর্মকান্ডের জন্য থাকছে প্রায় ৪০ শতাংশ জমির ওপর একটি পুকুর, শাক-সবজি ও ফসল আবাদের জন্য রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত খোলা জায়গা। এছাড়া প্রত্যেক হিজড়ার আত্মকর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে একটি মাল্টিপারপাস কক্ষ। প্রকল্পের সাথেই রয়েছে ৮০০ শতাংশের বড় সরকারি বিল। গুচ্ছগ্রামে নির্মাণ করা প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে আলাদা রান্নাঘর ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা। এছাড়া উপকারভোগীরা পান রান্নার সামগ্রী, খাট, বিছানার চাদর, বালিশ ও কম্বল।

হিজড়াদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি হস্থান্তর করা হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম
হিজড়াদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি হস্থান্তর করা হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জেলা হিজড়া কল্যাণ সংস্থার সভাপতি নিশি সরকার বাসস্থান পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা ভিক্ষাবৃত্তি চাই না, চাঁদাবাজি করে জীবন চালাতে চাইনা। আমরা মানুষের মতো বাঁচতে চাই। কম্পিউটার, সেলাই, পার্লারের কাজসহ নানা প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা উপার্জন করতে চাই।

সদর ইউএনও ফিরোজ আল মামুন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহায়তায় ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা এই কাজটি শেষ করতে পেরে আনন্দিত। আমরা চাই তৃতীয় লিঙ্গের এই মানুষগুলো আমাদের সাথে বাস করে আমাদের জনশক্তিতে রূপান্তরিত হোক। কেবল জমিসহ ঘরই নয়, ওই গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে সমাজের অবহেলিত ও অপাংক্তেয় তৃতীয় লিঙ্গ হিজড়া জনগোষ্ঠির জীবনমান এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে। যাতে তারাও সমাজের মূলস্রোতে একিভূত হতে পারে।

জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের এই মানুষগুলো আমাদেরই স্বজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে আন্তরিক থেকে কাজ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের বাসস্থানের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির চেষ্টাও আমরা করছি।