জামালপুরে বাকাসস এর কর্মবিরতিতে জেলা প্রশাসনের কার্যক্রম স্থবির

জামালপুরে বাকাসস এর কর্মবিরতি কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সভাপতি মো. শামসুদ্দিন। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জাহাঙ্গীর সেলিম ❑
বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস) ঘোষিত পদ-পদবি পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে সারাদেশের মতো পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করায় জামালপুর জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি চলাকালিন সরেজমিনে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পরিদর্শন করতে গিয়ে এই অচলাবস্থা লক্ষ্য করা গেছে।

২৩ নভেম্বর সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের কর্মচারিরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে তৈরি সামিয়ানা টানানো মঞ্চে কর্মবিরতি শুরু করে। বাকাসস নেতৃবৃন্দ তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে ধারাবর্ণনাসহ জোরালো ভাষায় বক্তব্য প্রদান করে।

জামালপুর বাকাসস এর সভাপতি এবং ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমন্বয়ক মো. শামসুদ্দিন এই প্রতিনিধিকে জানান, ২০১১ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তা কার্যকর করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করলে রহস্যজনক কারণে আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গঠিত স্থায়ী কমিটি সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়ন করতে গড়িমসি করছে।

জানা যায়, বৃটিশদের রেখে যাওয়া শোষণ প্রক্রিয়ার পদবি পাল্টে দেশ উপযোগী পদ পদবী প্রবর্তন করা সময়ের দাবি হলেও তা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে। ২০ বছর ধরে বাকাসস আন্দোলন করে আসলেও পদবি এবং বেতন কাঠামো সেই মান্ধাত্ম আমলেরটাই অনুসরণ করা হচ্ছে।

বাকাসস জামালপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন জানান, দাবি মানা না হলে চলতি আন্দোলন আরো জোরদার করা হবে। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতি পালন করা হবে। আগামী ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হবে। সমাবেশ থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

জেলা প্রশাসনের রেকর্ড রুমে জমির কাগজ তুলতে এসে কোন ধরনের সেবা না পেয়ে ষাটোর্ধ বৃদ্ধ ছয়মদ্দিন বাড়ি ফিরে যাওয়ার পথে এই প্রতিনিধিকে ক্ষোভের সাথে বলেন, ট্যাহা খরচ কইরা সরিষাবাড়ী থাইক্যা আইলাম কুনো কাম অইলো না।

একই ধরনের অভিযোগ জামালপুর পৌরসভার বাগেরহাটা থেকে আসা মরিয়ম বেগমের। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাধারণ শাখায় একটি জরুরি কাজে এসে বসে আছি কেউ কোন সাড়া দিচ্ছে না।

বাকাসস এই আন্দোলনের ফলে প্রতিদিন শত শত মানুষ জরুরি সেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে। এ ব্যাপারে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি বাস্তবায়নে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আমরাও চাই তাদের পদগুলো আপগ্রেড হোক। অন্যান্য দপ্তরগুলোতে পদ এবং বেতন কাঠামো পরিবর্তন হয়েছে তাদেরটাও হওয়া উচিৎ।