নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের গভীর ক্ষোভ

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল

করোনার এ দুর্যোগ পরিস্থিতিতে নারী ও শিশুদের পারিবারিক সহিংসতার পাশাপাশি যৌন নিপীড়ন এবং নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময়কালে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী সেপ্টেম্বর, ২০২০ মাসে ১০৭টি নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যদিও আগস্ট মাসে এ সংখ্যা ছিল ১১৫। এ সংখ্যা নারী ও শিশু নির্যাতন পরিস্থিতির ভয়াবহতা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সময়ে ধর্ষণের ঘটনা ৮৩টি, দলবেঁধে ২১টি, ধর্ষণ ও হত্যার ৩টি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ৮৩টি ধর্ষণের ঘটনায় ৪১টিই শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। পাশাপাশি এ মাসে ১৩ জন শিশুসহ মোট ২৪টি ধর্ষণের চেষ্টা ও ১৮ জন যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছেন।

সম্প্রতি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজে বেড়াতে আসা এক দম্পত্তিকে কলেজের ক্যাম্পাস থেকে জোরপূর্বক ছাত্রাবাসে নিয়ে যাওয়া হয় এবং স্বামীকে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে তাঁর স্ত্রীকে ৫-৬ জন ছাত্র দলবেঁধে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়ায় দেশের প্রতিটি স্তর থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো অব্যাহত রয়েছে।

সুরক্ষায় ও নিরাপদে থাকার বদলে দেশের অনেক স্থানে নারী ও মেয়েশিশুরা নানাভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, যা উদ্বেগজনক। শিশু ও নারীদের প্রতি সহিংসতার ঘটনা অব্যহতভাবে বেড়ে যাওয়ায় চলমান পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে চলে যাচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে, করোনা সংকটের কারণে চলমান অবস্থায় যেখানে প্রতিটি মানুষ পরস্পরের, বিশেষ করে শিশুরা অধিক সহমর্মিতা ও সহানুভূতির দাবি রাখে, সেখানে জনগোষ্ঠীর বিশেষ অংশের প্রতি সহিংসতা বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।

নিঃসন্দেহে শিশু ও নারীদের জন্য নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে জীবন যাপন ও চলাফেরার মত সহায়ক উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারা রাষ্ট্রের দুর্বলতা।

এমএসএফ সমাজে ধর্ষণের এ ভয়াবহতা প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে সামাজিক সচেতনতা তৈরি এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি শিশু ও নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুততার সাথে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যকীয় বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। পাশাপাশি নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির প্রয়োজন আছে বলে মনে করে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি