অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন মাশরাফি

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়লেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। একমাত্র এই ফরম্যাটেই বর্তমানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছেন তিনি। ৬ মার্চ সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেটি হবে অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির শেষ ম্যাচ। অধিনায়কত্ব ছাড়লেও, টিম ম্যানেজমেন্ট চাইলে শুধুমাত্র খেলোয়াড় হিসেবেই বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন মাশরাফি।

৫ মার্চ সিলেটের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক হিসেবে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন মাশরাফি।

মাশরাফি এর আগে বলেছিলেন, অবসরের সিদ্বান্তটি তার উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিত এবং তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যদি তাকে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে বলে তাহলে সেই দায়িত্ব ছেড়ে দিবেন তিনি।

কিন্তু এখন নিজেই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন মাশরাফি। তাই গেল কয়েক মাস ধরে চলতে থাকা সকল জল্পনা কল্পনার অবসানও ঘটলো।
একটি লিখিত বিবৃতিতে মাশরাফি বলেন, ‘সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের আগে আমি কিছু বলতে চাই। অধিনায়ক হিসেবে আগামীকাল আমার শেষ ম্যাচ। আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) ধন্যবাদ দিতে চাই, এত দীর্ঘ সময়ের ধরে আমার উপর আস্থা রাখার জন্য। আমার অধীনে যেসব খেলোয়াড়রা খেলেছে, তাদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, প্রক্রিয়াটি সহজ ছিলো না। এটি ছিলো ৫/৬ বছরের যাত্রা। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই টিম ম্যানেজমেন্টকে, যাদের পরিচালনায় আমি খেলেছিলাম এবং আমি নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। সকলেই আমাকে সহায়তা করেছে। মূলত চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সময় আমার অধিনায়কত্ব শুরু হয়েছিলো। তার আগেও, আমি অধিনায়ক ছিলাম কিন্তু ইনজুরির কারনে করতে পারিনি। তাই হাথুরুসিংহের অধীনেই আমার আসল অধিনায়ত্ব শুরু হয়েছিলো। এরপর খালেদ মাহমুদ সুজন, স্টিভ রোডস এবং এখন রাসেল ডোমিঙ্গো দিয়ে শেষ করছি। আমি আরও ধন্যবাদ দিতে চাই, নির্বাচক, বোর্ড স্টাফ, মিডিয়া এবং অবশ্যই ভক্তদের। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভবপর ছিলো না। আমি মাশরাফি বিন মর্তুজা, অধিনায়ক হিসেবে অব্যাহতি নিচ্ছি। যদি বোর্ড আমাকে দলে সুযোগ দেয়, তবে খেলোয়াড় হিসেবে আমার সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করবো। পরবর্তী অধিনায়কের জন্য আমার শুভ কামনা থাকলো। দীর্ঘদিন ধরে আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা থেকে তাকে সহায়তা করার চেষ্টা করবো।’

তিনি আরও বলেন, এমন সিদ্বান্ত তার পরিবারকে জানিয়েছেন যারা তাকে অনেক বেশি সমর্থন যুগিয়েছেন এবং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকেও এ ব্যাপারে অবগত করেছেন।

মাশরাফি বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠার পরই, আমি অনুভব করেছিলাম, অধিনায়ক হিসেবে আমার চালিয়ে যাওয়া উচিত হবে না। এরপর আমার পরিবারকে এ সিদ্বান্তটি জানিয়েছি। আমি তাদের সাথে কথা বলেছি এবং তারা আমাকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছে। এখানে আসার আগে আমি পাপন ভাইর সাথেও কথা বলেছি।’

দেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বলেন, ২০২৩ বিশ্বকাপের জন্য দলকে তৈরি করতে নতুন অধিনায়ককে সময় দেওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, বোর্ডের এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া উচিত, যাতে ২০২৩ বিশ্বকাপের জন্য দল তৈরি করতে নতুন অধিনায়কই ভূমিকা রাখে এবং শেষ পর্যন্ত যেন তাকেই রাখা হয়।

মাশরাফি বলেন, ‘আমি মনে করি, দল তৈরি করতে নতুন অধিনায়ককে সময় দেয়া উচিত। বিসিবির এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া উচিত। যদি তারা কাউকে অধিনায়কত্ব দেয়, কিন্তু এক বছর পর তাকে পরির্তন করে তাহলে এটি ভালো হবে না। নতুন অধিনায়ককে দীর্ঘ সময় দেওয়া উচিত। তাই যেকোন সিদ্বান্ত নেয়ার আগে বোর্ডকে ভালোভাবে চিন্তা করতে হবে।’

এই মুহূর্তে মাশরাফি মনে করেন, জুনিয়রের চেয়ে কোন সিনিয়রকে দলের অধিনায়কত্ব দেওয়া উচিত। সাকিবসহ, আরও তিন সিনিয়র খেলোয়াড় রয়েছে যারা আগে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে। তবে বোর্ডই ভালো জানে, তারা কাকে অধিনায়কত্ব দিতে চায়। তাই বোর্ডকে এ ব্যাপারে সিদ্বান্ত নিতে হবে। কিন্তু যদি আমার মতামত জানতে চাওয়া হয়, তবে আমি বলবো, এই মূর্হুতে সিনিয়ররাই দলকে নেতৃত্ব দিলে ভালো হয়। কারন তারা হিসেবে অভিজ্ঞ। তবে এটি এখন পুরোপুরি বোর্ডের সিদ্বান্ত।’সূত্র:বাসস।