সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক শেলু আকন্দ গুরুতর আহত, ছাত্রলীগনেতা রাকিব গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার ছাত্রলীগনেতা রাকিব খান। সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত সাংবাদিক শেলু আকন্দ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সাংবাদিক শেলু আকন্দ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙে দিয়েছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকায় পুরাতন এসডিও বাসভবনের পেছনে বাইপাস রাস্তায় তার ওপর এ বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটে।

এ হামলার ঘটনায় আহত সাংবাদিক শেলু আকন্দের ভাই মো. দেলোয়ার হোসেন আকন্দ বাদী হয়ে ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকার মৃত গোলাম রসুলের ছেলে তুষার খান ও তুহিন খান, জামালপুর পৌরসভার কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান খান রুনুর ছেলে জেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম খান রাকিব ও শুনু খানের ছেলে স্বজন খানসহ সাতজনের নামে এবং অজ্ঞাত আরো ছয়-সাত জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে ছাত্রলীগনেতা রাকিবুল ইসলাম খান রাকিবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অভিযোগে জানা গেছে, দৈনিক বাংলাবাজারপত্রিকার জামালপুর প্রতিনিধি, জামালপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক পল্লীকণ্ঠ প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার ও জামালপুর প্রেসক্লাবের সদস্য শেলু আকন্দ একজন ডায়াবেটিসের রোগী। তিনি ১৮ ডিসেম্বর রাতে শহরের দেওয়ানপাড়ার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বাইপাস রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছিলেন। রাত ১১টার দিকে পুরাতন এসডিও বাসভবনের পেছনে ১০/১২ জনের একটি সন্ত্রাসী দল অতর্কিতে সাংবাদিক শেলু আকন্দের ওপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা লোহার পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তার দুটি পা ভেঙে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। হামলার শিকার হয়ে তিনি সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকেন।

এ ঘটনা জানাজানি হলে দেওয়ানপাড়া এলাকার লোকজন তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। জরুরি উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে তাকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

১৯ ডিসেম্বর রাতে হাসপাতালে ভর্তি করার সময় সাংবাদিক শেলু আকন্দ অভিযোগ করে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, জামালপুর পৌরসভার কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান খান রুনুর ছেলে জেলা ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম খান রাকিব ও তার সহযোগী তুষার খান, স্বজন খান ও তুহিন খানসহ ১০/১২ জন সন্ত্রাসী তাকে পেটানোর সময় ‘মামলার সাক্ষী হইছস না, সাক্ষী দিবি, তর সাক্ষী হওয়ার স্বাদ মিটাইতাছি’ বলতে বলতে লোহার পাইপ দিয়ে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় তারা।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়ায় সাংবাদিক শেলু আকন্দের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলার সাতজন আসামির মধ্যে রাকিবুল ইসলাম খান রাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

এদিকে জামালপুর প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক শেলু আকন্দের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা ১৮ ডিসেম্বর রাতে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ছুটে যান। তারা সাংবাদিক শেলু আকন্দের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার সাথে জড়িত সকল আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।