জামালপুরের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত ডিগ্রিরচর ঈদগাহ ময়দানে

ডিগ্রিরচর ঈদগাহ ময়দানে জামালপুরের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতে অংশ নেন মুসল্লিরা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এম কে দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর থেকে

জামালপুর জেলার সবচেয়ে বড় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলার ইসলামপুর উপজেলার প্রত্যন্ত ডিগ্রিরচর গ্রামে। ৫ জুন অন্তত অর্ধলক্ষাধিক মুসল্লির অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী এ ঈদগাহ মাঠে ৮৬তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে স্থানীয়রা ছাড়াও অন্যান্য উপজেলার হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা জামাতে অংশ নেন।

জানা যায়, উপজেলা সদরের পূর্ব প্রান্তে উপজেলার চরগোয়ালিনী ইউনিয়নে অবস্থিত জেলার সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী ডিগ্রিরচর ঈদগাহ ময়দান। প্রতিবছর এ ময়দানে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। কালের স্রোতে ডিগ্রিরচর ঈদগাহ ময়দানটি পরিণত হয়ে উঠেছে একটি ঐতিহাসিক স্থানে। জেলার সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠিত এ ময়দানের বিশাল ঈদের জামায়াত গৌরবান্বিত ও ঐতিহ্যবাহী করে তুলেছে ইসলামপুর উপজেলাকে।

মহান আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভের আশায় প্রতিটি ঈদেই ঈদগাহে সকাল সকাল হাজির হন মুসুল্লিরা। যেখানে এক সঙ্গে অন্তত অর্ধ লক্ষাধিক মুসুল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। জেলার সবচেয়ে বড় ঈদগাহে ঈদের নামাজে অংশ নিতে এবারও সকাল থেকেই ছিল মুসুল্লিদের ঢল। সকাল ১০টায় প্রতিবারে মতো এবারও ঈদের নামাজের জামাতে ইমামতি করেন জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম হযরত মাওলানা এনায়েত উল্লাহ। জেলার এই বৃহত্তম ঈদ জামায়াতে অংশ নিতে পেরে শুকরিয়া আদায় করেন মুসুল্লিরা। একই সঙ্গে এতো বড় ঈদ জামাত আয়োজন করাতে স্থানীয়দের মাঝে ছিল খুশির আমেজ।

জানা গেছে, ডিগ্রিরচর বড় ঈদগাহ মাঠটি ১৯৩৩ সালে স্থানীয় প্রখ্যাত আলমে-দ্বীন আল্লামা হযরত মফিজ উদ্দিন (রহঃ) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করলে এতে সর্বপ্রথম ৪০ শতাংশ জমি দান করেন স্থানীয় হাজি নয়ানদর ব্যাপারী। এরপর দ্বিতীয় বারের মতো ঈদগার নামে ১৯৯২ সালে ১০ শতাংশ জমি দান করেন সমাজ সেবক রুস্তম আলী। এসব সমাজহৈতষি ব্যক্তিরা আজ কেউই বেঁচে নেই। বর্তমান ডিগ্রিরচর বড় ঈদগাহ মাঠের জমির পরিমাণ ৫ বিঘা। এই ঈদগাহ মাঠটির চারের তৃতীয়াংশ উচু দেয়ালে ঘেরা। এছাড়া এই মাঠের প্রাচীর দেয়ালে দুইট দরজা রাখা হয়েছে। মাঠে মুসল্লির সংখ্যা প্রতিবছর বেড়ে চলেছে।

ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজি আবু তালেব জানান, প্রখ্যাত আলমে-দ্বীন হযরত মাওলানা মফিজ উদ্দিন ১৯৩৩ সালে ডিগ্রিরচর গ্রামে ঈদের জামায়াতের আয়োজন করেন। ওই জামায়াতে ইমামতি করেন তিনি নিজেই। পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ চিকিৎসক এনামুল হক জানান, দানকৃত ৫০শতাংশ জমি বাদে বাকি ১৬৫ শতাংশ জমি মুসল্লিদের দানের টাকায় ক্রয় করা হয়।

পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী লুৎফর বাংলারচিঠিডটকমকে জানান, ঈদগাহ’র ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কার্যনির্বাহী কমিটি রয়েছে। ঈদের নামাজের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড এই কমিটি করে থাকে। ইসলামপুর উপজেলার চরপুটিমারী ও চরগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৩৬টি গ্রামের মুসল্লিসহ পাশ্ববর্তী মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ও দুরমোঠ ইউনিয়ন এবং শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুসল্লিরা ঈদের জামায়াতে অংশ গ্রহণ করেন। আগামীতে মাঠের আয়তন আরও বাড়ানো হবে। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো ধরনের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।