মাদারগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণ কাজে বাধা

জমির মালিকগণ ক্ষোভ প্রদর্শন করলে উপজেলা প্রশাসন তাদের সাথে আলোচনার আশ্বাস দেন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জাহিদুর রহমান উজ্জল, মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার খড়কাবিল খননের কাজ জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই শুরু করায় ক্ষোভ প্রদর্শন করেছে জমির মালিকগণ। তারা ৪ এপ্রিল সকালে উপজেলা পরিষদের পিছনে খরকাবিলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়ে ক্ষোভ প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হলে জমির মালিকদের সাথে আলোচনার আশ্বাস দেন। এ সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এলাকাবাসীর প্রতি আহবান জানানো হয়।

জানা গেছে,মাদারগঞ্জ উপজেলার খড়কাবিল ২২.৭৬ হেক্টর জমি পুন:খনন কাজ এর প্রাক্কলিত মূল্য ৬ কোটি ৫ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৪ টাকা বরাদ্দ পায় তমা কনস্ট্রাকশন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।

৪ এপ্রিল সকালে হাওয়ায় সড়কে সরেজমিন গেলে জমির মালিক ফরিদ উদ্দিন চাঁন বলেন, খরকাবিলের সাথে তারতা পাড়া ও বলধভরা মৌজায় আমার পৈতৃক সিএস, আরওআর এবং বি আর এস মূলে এক একর ৩৪ শতক জায়গা রয়েছে। খড়কাবিল খনন প্রকল্পের জন্য এই জায়গা অধিগ্রহণ না করে জমিতে চাষকৃত কাঁচা ধানের উপর দিয়ে বেকু দিয়ে মাটি খনন করে রাস্তা নির্মান কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। খাস জমিতে কাজে আমাদের আপত্তি নেই ব্যক্তি মালিকানা জমিতে কিভাবে নির্মাণ কাজ শুরু করে। জমির মালিকগণ প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক এর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানান।

জমির মালিক ভানু মিয়া জানান, ইতিপূর্বে একই দাগের ফসলি জমির উপর দিয়ে ১ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা নির্মাণ করা হয় অথচ অধিগ্রহণ আইন থাকার পরেও শত শত জমির মালিক একটি পয়সা ক্ষতিপূরণ পায়নি। আমরা জমির মালিকগণ প্রতিবাদ জানালে নেতারা বলছে উন্নয়নের জন্য একটু ক্ষতি মানতে হবে। সরকার এই জমিতে প্রকল্প করছে আমাদের কোনো নোটিশ দেয়নি। সরকার আমার এই ৯ শতক জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে নিতে চাইলে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না।

রমিজ মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, ফসলি জমিতে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে না। তারপরও ফসলি জমিতে একের পর এক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। জীবন দিব, জমি দেবো না। খরকাবিলে আমার ৩৮ শতক জমি রয়েছে এবং এ জমি ফসলি। এ জমিতে দুবার ধান আবাদ করি। আমাদের শেষ সম্বলটুকু নিয়ে গেলে আমরা পথে বসব।

খড়কাবিলে ভিকু দিয়ে খনন কাজ করা হচ্ছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, প্রকল্পটি মূলত জেলা প্রশাসক এর। এখানে খড়কাবিল এর খনন কাজ করতে গেলে এলাকার কিছু লোকজন পৈতৃক জমির উপর খনন কাজ চলছে এমন অভিযোগে বাধা প্রদান করে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়জনগণ, ইউএনও, ওসিসহ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিয়ে আলোচনা ও জমির পরিমাপ হচ্ছে। খাস জমি ব্যতিত ব্যক্তি মালিকানা জমিতে আমরা খনন কাজ করবোনা। স্থানীয় ভূমি কার্যালয় আমাদের খাস জমি বুঝিয়ে দিলে কাজ করবো।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, পৈতৃক সম্পতি দাবিদারদের কাগজপত্র দেখে আমরা খাস জমিতে কাজ করবো।

মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, শান্তিশৃংখলা যেন বজায় থাকে এজন্য পুলিশ এখানে কাজ করছে।