মেষ্টায় এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের ঝাউরাম গ্রামের মধ্যপ্রাচ্যের ওমান প্রবাসী শান্ত মিয়ার স্ত্রী মোর্শেদা বেগমের (২০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৩ এপ্রিল বিকেলে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই গৃহবধূ একই ইউনিয়নের কলতাপাড়া গ্রামের কৃষক মুক্তি মিয়ার মেয়ে।

ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ পরবর্তী শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে, নাকি আত্মহত্যা করেছেন- এ নিয়ে পুলিশ ও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ নিশ্চিত কিছু বলতে পারছেন না। তার এক দেবর ও শ্বশুর-শাশুড়ি ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দেওয়ায় ঘটনাটিকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন গ্রামবাসী ও নিহতের স্বজনরা।

পারিবারিক ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৩ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝাউরাম গ্রামের ওমান প্রবাসী শান্ত মিয়ার স্ত্রী মোর্শেদা বেগমের আত্মহত্যার কথা প্রতিবেশীদের জানায় তার শাশুড়ি মর্জিনা বেগম। এরপর থেকেই তার শাশুড়ি, শ্বশুর মুসলিম উদ্দিন ও দেবর শাহীন মিয়া গ্রাম ছেড়ে গা ঢাকা দেন।

প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে গিয়ে গৃহবধূ মোর্শেদাকে ঘরের মাচার ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার বাবা-মায়ের কাছে এবং পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে সদর উপজেলার নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আলিম পুলিশ ফোর্স নিয়ে ওই বাড়িতে যান। ঘরের ধর্ণায় ঝুলে আত্মহত্যার কথা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোর্শেদাকে ঘরের মাচার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। আর ঘরের ধর্ণার সাথে পেঁচানো অবস্থায় একটি উড়না পাওয়া যায়। একই সাথে গৃহবধূর শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবরের গা ঢাকা দেওয়ায় প্রতিবেশী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনাটিকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন।

নিহত গৃহবধূর চাচা মো. হযরত আলী বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, শান্ত মিয়ার সাথে আট মাস আগে বিয়ে হয় মোর্শেদা বেগমের। বিয়ের চার মাস পর শান্ত মিয়া চাকরি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে চলে যান। শ্বশুর-শাশুড়ি ও এক দেবর তাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকার জন্য চাপ দিতো এবং বাড়িতে যেতে দিতো না। মোর্শেদার কোনো অসুখও ছিল না। এভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কিছুই বুঝতে পারছি না আমরা।

নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের উপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আলিম বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূ মোর্শেদাকে ঘরের ধর্ণায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়নি। তার পরনে সালোয়ার কামিজ ছিল। সুরতহাল করে তার গলার দুই পাশে কালো ফোলা জখম পাওয়া গেছে। শরীরের আর কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাকে ধর্ষণ পরবর্তী শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে, নাকি আত্মহত্যা করেছে- তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে কোনো অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ পাওয়া গেলে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে।