‘মওলানা ভাসানীকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

এম ইউ শাকিল, নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

‘মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী একজন মহামানব। যে মানবের জন্ম না হলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হতো না, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন হতো না, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্ত করে আনতে পারতো না এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতির পিতা হতে পারতো না। এই ইতিহাসকে কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। কিন্তু ইতিহাস থেকে মওলানা ভাসানীকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি এমন একজন নেতা বিভিন্ন দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাকে নিয়ে থিসিস করা হচ্ছে।’

‘যুগ যুগ জিও তুমি মওলানা ভাসানী’ এই স্লোগানে ভাসানী অনুসারী পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার আয়োজনে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম মওলানা ভাসানী ও আজকের বাংলাদেশ ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা মওলানা ভাসানীর গুরুত্ব তুলে ধরে আরও বলেন, নতুন প্রজন্ম জানে না মওলানা ভাসানী কে? অনেক বই থেকে মওলানা ভাসানীর লেখা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিছু বইয়ে থাকলেও সঠিক ইতিহাস নেই। এভাবে কি তাকে দাবায়ে রাখা যাবে? মওলানা ভাসানীকে বলা হয় স্বপ্নদ্রষ্টা। কেননা তিনি সর্ব প্রথম জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। স্বপ্নদ্রষ্টা কখনো দু’জন হয়না, হয় একজন।

তারা বলেন, মওলানা ভাসানী ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ ’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় তিনি ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘আওয়ামী লীগ’ শব্দটি ধারণ করেছিলেন। এটা মওলানা ভাসানীর অবদান। আর নৌকা মার্কা তার সৃষ্টি।

বক্তারা আরো বলেন, এক ব্যক্তি কখনো স্বাধীনতা আনতে পারে না। মওলানা ভাসানী পরিষদ যদি জেলায় জেলায় ‘স্বাধীনতা ও মওলানা ভাসানী’ এ প্রসঙ্গ জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে সচেষ্ট হয়, তবে এ দেশের মানুষের অধিকার যেভাবে ছিঁড়ে যাচ্ছে এবং তারা যে অসহায় বোধ করছেন, এই অসহায়ত্ব আর তাদের থাকবে না, তারা একটা শক্তিতে পরিণত হবে। এছাড়া ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন, বাংলাদেশে অভ্যুদয়ে আন্দোলন এবং আজকের বাংলাদেশ- এই তিনটি ভাগে মওলানা ভাসানীর নাম এবং কর্ম নিয়ে আলোচনা করা হলে নতুন প্রজন্ম তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে। মওলানা ভাসানীকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ের জন্য আমরা আজীবন লড়াই করে যাব। প্রয়োজনে জামালপুর থেকে এ আন্দোলনের সূচনা হবে।

ভাসানী অনুসারী পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাবিবুর রশীদ বাবু এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী। এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক হককথা পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক সৈয়দ ইরফানুল বারী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাক্তন মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হক, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মনজুরুল কাদের বাবুল খান, ভাসানী ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহম্মেদ, আক্তার হোসেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য সচিব কে এম রফিকুল ইসলাম, ভাসানী অনুসারী পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার সহসভাপতি আইনজীবী রবিউল আলম বাবলু, হাসানুজ্জামান তালুকদার, জাকির হোসেন, মুভমেন্ট ফর জাস্টিস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এন এন তাপস পাঠান, বিএনপিনেতা আইনজীবী শামছুল হক প্রমুখ।