সরিষাবাড়ীতে পূজামণ্ডপে দুর্বৃত্তের হানা, পুলিশসহ আহত দুই, এসআই লাঞ্ছিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
জামালপুর, বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা সদরের দুটি মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজার আরতি চলাকালে দুর্বৃত্তদের হামলায় বৈদ্যুতিক ডেকোরেটর মালিক ও এক পুলিশ কনস্টবল আহত, একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর এবং পুলিশের একজন এসআইকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। ১৮ অক্টোবর দিবাগত রাত সোয়া ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় দুটি মন্দিরে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের এবং সাধারণ দর্শনার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। এতে দুর্গাপূজার কার্যক্রম কিছুক্ষণ ব্যাহত হয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ১৮ অক্টোবর রাত সোয়া ১০টার দিকে মাসুদুর রহমান নামের এক যুবকের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন যুবক সরিষাবাড়ী পৌরসভার আরামনগর বাজারে রামকৃষ্ণ কালী মন্দিরের দুর্গাপূজার বৈদ্যুতিক ডেকোরেটর মালিক ইকবাল হোসেনকে মন্দিরের গেটের বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তারা ইকবাল হোসেনকে মারধর এবং তার মোটরসাইকেলটি ভাংচুর করে। এ সময় পূজার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহিদুল ইসলাম একা ইকবাল হোসেনকে রক্ষা করতে গেলে হামলাকারীরা তাকে কয়েক দফা ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে লাঞ্ছিত করে। এ সময় পূজায় আসা লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে থানা থেকে পুলিশ গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

আরামনগর বাজার কালী মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মহাদেব সাহা এ ঘটনা প্রসঙ্গে বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘মন্দিরের গেটের বাইরে বেশ কয়েকজন যুবক আমাদের মন্দিরের দুর্গাপূজার বৈদ্যুতিক ডেকোরেটর ইকবাল হোসেনকে মারপিট ও তার মোটরসাইকেলটি ভাংচুর করেছে। পূজা চলাকালে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে হামলাকারীরা মণ্ডপের দিকে আসেনি। আমরা শুনেছি যে, ব্যক্তিগত ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা ইকবাল হোসেনের ওপর হামলা করেছে।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এসআই মো. জাহিদুল ইসলাম বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘ডেকোরেটর মালিক ইকবাল হোসেনকে মারধর এবং তার মোটরসাইকেলটি ভাংচুরের সময় আমি একা ছিলাম। ইকবাল হোসেনকে উদ্ধার করতে গেলে হামলাকারী যুবকরা আমাকে কয়েকবার ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে ওই যুবকরা দ্রুত পালিয়ে যায়। তবে মন্দিরের পূজাঅর্চণায় কোনো অসুবিধা হয়নি।’

অপরদিকে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজেদুর রহমান বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘আরামনগর বাজারের কালী মন্দিরের গেটের বাইরে ইকবাল হোসেনকে মারধর ও তার মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনার কয়েক মিনিট পর কাছাকাছি বিজেএমসি কলোনির দুর্গাপূজা মণ্ডপের গেটে ঢুকার চেষ্টা করে অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক। এ সময় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টবল মো. জাহিদুলের সাথে ওই যুবকদের কথাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই যুবকরা কনস্টবল জাহিদুলকে মারধর করে দ্রুত কেটে পড়ে।’

ওসি মো. মাজেদুর রহমান আরো বলেন, ‘কালী মন্দিরের গেটের বাইরে মারধর ও মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ কনস্টবল জাহিদুলকে মারধরের ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’