মেলান্দহে এক যুবকের বিদ্যুৎ উদ্ভাবন

ঘূর্ণায়মান চাকার সাহায্যে পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে এর উদ্ভাবক রাসেল ইকবাল। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

সাহিদুর রহমান, ইসলামপুর ॥
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার রাসেল ইকবাল নামে এক যুবক বিশেষ কায়দায় পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ উদ্ভাবন করে চমক সৃষ্টি করেছেন। রাসেলের উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ দেখার জন্য শত শত লোক তার বাড়িতে ভীড় জমাচ্ছে।

রাসেল ইকবাল মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের রেখির পাড়া গ্রামের মৃত আফসার আলীর ছোট ছেলে। সে দীর্ঘ সাত বছর গবেষণার পর অবশেষে তার নিজ বাড়িতে বিশেষ কায়দায় দুটি ব্যাটারি, ডিসি মটর, এসি মটর, দুইটি রাডার লাগানোসহ বিভিন্নভাবে ঘূর্ণায়মান চাকার মাধ্যমে ৪৪০ ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন।

তার এ উদ্ভাবনীতে জেনারেটরের বিকল্প ৬০ ভোল্টের ব্যাটারীর সাহায্যে শুধু সুইচ অন-অফের কাজ করছে। ব্যাটারি অটোচার্জ হয়ে চাকা ঘুরলেই উৎপাদিত বিদ্যুৎ সাপ্লাই হচ্ছে। এ বিদ্যুতের মাধ্যমে তার বাড়িতে ছয়টি ফ্যান, ১০টি বাতি, একটি কালার টিভি ও ফ্রিজ চলছে। এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ৭০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে তার। তিনি এ উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বিদ্যুৎ’।

এ ব্যাপারে মিনি বিদ্যুৎ প্রকল্প উদ্ভাবক ক্ষুদে বিজ্ঞানী রাসেল ইকবাল জানান, আমি সাইকেল মেকানিকের কাজ করার সময় বলপেনের বডি কেটে চাকা তৈরি করে খেলনা মটরের সাহায্যে আমার ব্যবহারিক সাইকেলের চাকায় ফিটিং করি। এতে ঘর্ষণে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়ে রং-বে রংয়ের মিউজিক লাইট জ্বলতে থাকে। এরপর থেকেই আমি বিদ্যুৎ উদ্ভাবনের চিন্তা করি। দীর্ঘ সাত বছর গবেষণার পর প্রথম বৈদ্যুতিক লাইট ও পাখা চালাতে সক্ষম হন তিনি।

তার এ উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ পরিবেশ বান্ধব, এটি উৎপাদন করতে কোনো গ্যাস, তেল বা জ্বালানী কোনটার প্রয়োজন হয়না।

ক্ষুদে বিজ্ঞানী রাসেলের অভিমত, বড় আকারে তার এ প্রজেক্টে বাণিজ্যিকভাবে স্বল্প খরচে একটি জেলাতে স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো যাবে। তবে খরচের টাকা গ্রাহকের দুই-তিন মাসের বিদ্যুৎ বিলেই উঠে যাবে। এর পর আর উৎপাদন খরচ হবে না। তার এ বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রজেক্ট পরিচালিত করতে দুই একজনই যথেষ্ট।

তিনি আরো জানান, সরকার যদি তার উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে ভাবে, তাহলে দেশের শহর, গ্রামগঞ্জের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে কাজ করবে তার এ প্রকল্প। এ ছাড়া দূর্গম অঞ্চলে যেখানে সাধারণ বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব না; সেখানে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে আলোকিত হবে গ্রামের পর গ্রাম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেলান্দহ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তামিম আল ইয়ামিন বলেন, আমি আপনার মাধ্যমেই বিষয়টি জানতে পারলাম। তাকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন, বিষয়টি আমি দেখব।