বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও শেরপুর-১ (সদর) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মো. রাশেদুল ইসলাম বলেছেন, আমরা দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই। সন্ত্রাসীদের কোন মত নেই। তাদের কোন ধর্ম নেই। আমরা জাতি, ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছি। এই জিহাদ থেকে যারা পিছপা হবে তারা জাতীয় বেঈমান হিসেবে পরিগণিত হবে।
২৬ অক্টোবর, রবিবার বিকালে শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের ডাকপাড়া গ্রামে শেরপুর -১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ মো. রাশেদুল ইসলামের গণসংযোগ চলাকালে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে এবং শেরপুর শহরের থানামোড়ে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা বিশেষভাবে বলছি, কোন একটি রাজনৈতিকগোষ্ঠী সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। আবার তারা সাংবাদিকদের সামনে গিয়ে মিথ্যা কথা উপস্থাপন করে সন্ত্রাসীদের পরিচয় দেওয়া থেকেও বিরত থাকছে। আমি কারও নাম উল্লেখ করে বলতে চাই না শেরপুরে কারা চাঁদাবাজি করে। কারা সন্ত্রাস করে। এ বিষয়ে শেরপুরের প্রত্যেকটি ব্যবসায়ী ও আপামর জনসাধারণ অবগত রয়েছেন।

হাফেজ মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে আমরা মুক্ত করেছি একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ার জন্য। কিন্তু আমরা বিগত ছয় মাসে দেখেছি তারা শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের জবাব বিএনপিকে দিতে হবে।
তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের হাতে এখনও সময় আছে আপনারা শুভ রাজনীতি করুন। সৎপথে আসুন। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের সাধুবাদ জানাবে। আপনারা যদি এই সন্ত্রাসীর পথ, এই চাঁদাবাজির পথ ছেড়ে না দেন তবে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী আপামর জনতাকে নিয়ে যে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। সেই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এর পরিসমাপ্তি আনব ন্যায়ের বিচারের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, আমরা এই শেরপুরটা আমাদের শহীদের রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি। সুতরাং শেরপুরের তিনটি আসনকে শহীদের রক্তের বদলা হিসেবে আমরা শেরপুরবাসীর কাছে ভিক্ষা চাইছি।
তিনি বলেন, আমাদের শহীদ কামারুজ্জমানের প্রতি বিগত দিনে আপনারা যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন। আগামী দিনে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে সেই ভালোবাসার পূর্ণ রূপ দিবেন ইনশাল্লাহ। আমি বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বলব, আপনারা সৎ রাজনীতি করুন। পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন। মানুষের পাশে থাকুন। যদি থাকতে ব্যর্থ হন তবে মানুষ আপনাদের ব্যর্থ করে দিবে ইনশাল্লাহ।
সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে রাশেদুল ইসলাম আরও বলেন, দাঁড়িপাল্লার যে গণজোয়ার আজ সৃষ্টি হয়েছে, এই গণজোয়ার শহীদ কামারুজ্জামানের রক্তের প্রতিশোধ নেয়ার গণজোয়ার। এই গণজোয়ার মানুষের মুক্তির আন্দোলনের গণজোয়ার। এই গণজোয়ার এ দেশের মানুষের প্রকৃত অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলনের গণজোয়ার। তাই আমাদের সামনে নানান কায়দায় সন্ত্রাসী উদ্যোগ নিয়ে যদি কেউ আসতে চান, আমরা তাদের সাবধান সতর্ক করে দিচ্ছি। শেরপুরের মানুষ আপাতত ধৈর্য্য ধরেছে মানে আপনারা এ কথা মনে করে নিয়েন না, যা ইচ্ছা তাই করবেন। যদি কোন সন্ত্রাসী কার্যক্রম কেউ করে, দলীয় ব্যানারে হোক বা অন্য যেকোনোভাবে। তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য আমাদেরকে সবসময়ের জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে।

শহরের থানা মোড়ে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শেরপুর জেলা আমীর মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা সেক্রেটারি শেরপুর-৩ (শ্রীবর্দী-ঝিনাইগাতী) আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মু. নুরুজ্জামান বাদল, শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী সাবেক ভিপি মু. গোলাম কিবরিয়া, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য ডাক্তার মো. আনোয়ার হোসাইন, জেলা শুরা সদস্য হাফেজ মাওলানা আব্দুল বাতেন, শহর আমীর মাওলানা নুরুল আমীন, সেক্রেটারি ডাক্তার হাসানুজ্জামান, জয়েন্ট সেক্রেটারি জাহিদ আনোয়ার, আমিনুর রসুল প্রমুখ।
শেরপুর শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্ত¡র মোড় থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে এখানে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
মুগনিউর রহমান মনি : নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম 


















