জামালপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ বলেছেন, আমাদের নেতা একজনই। বিএনপি করতে হলে তারেক জিয়ার নামেই স্লোগান দিতে হবে। আমরা আমার ভাই তোমার ভাই অমুক ভাই স্লোগান দেখতে পাই। এই যে ভাই ভাই। যে দলের মালিক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাহেব ১৯ দফা ঘোষণা দিয়েছিলেন। আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপসহীন থেকে স্বৈরাচার এরশাদকে পতন ঘটিয়েছিলেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। সেই দলের বর্তমান কাণ্ডারি তারেক রহমানের নামেই স্লোগান দিতে হবে।
২৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জামালপুর শহরের বকুলতলা মোড়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে বিএনপিনেতা শামীম আহমেদ এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি ছবিসহ কাগজ নিয়ে প্রার্থী হয়ে ভোট চাইছেন। কিন্তু দল এখনও কাউকে তো নমিনেশনই দেয়নি। তারেক জিয়ার ৩১ দফাকে সামনে রেখে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনি তারেক সাহেবের সালাম দিবেন। তারপর ভোট চাইবেন।
শেখ হাসিনার সরকার প্রসঙ্গে শামীম আহমেদ বলেন, একটা দেশের শুধু বারোটা বাজিয়েই যায় নাই শেখ হাসিনার সরকার। দেশকে সিকিম রাষ্ট্রে পরিণত করে গেছে। বিশ্বের মানচিত্রে তলানিতে ঠেকিয়ে দিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার সরকার রাতের আঁধারে ভোট নিয়ে ভোট বাক্স ভরে নির্বাচন করেছেন। তারেক রহমান ৫ তারিখের আগেই বলেছেন, আপনি যাকে খুশি তাকে ভোট দিবেন। কিন্তু আমার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। যাতে আপনার ভোট নিয়ম মাফিক প্রয়োগ করতে পারেন।

তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আপস করেননি। উনাকে হত্যা করা হয়েছে। ভারতের তাবেদারি ও পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশে নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। এর থেকে উত্তরণের জন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একমাত্র উত্তরসুরী তারেক রহমানকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একমাত্র কারণ রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য তাকে দরকার। রাষ্ট্রকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য তারেক রহমানের কোন বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের কোন বিকল্প নেই।
শামীম আহমেদ বলেন, আমরা যদি তারেক রহমানের ৩১ দফাকে প্রত্যেক ভোটারের কাছে পৌঁছাতে পারি। আমরা যদি ভোট ভিক্ষা চাই। অবশ্যই জামালপুর জেলার পাঁচটি আসন আমাদের নেতা তারেক রহমানকে উপহার দিতে পারব। এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধতা সৃষ্টি করতে হবে। দল যাকে মনোনয়ন দিবে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একাকার হয়ে ওই প্রার্থীর পেছনে ওই আসনে নির্বাচনে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। এই যে আমরা আজ তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার প্রশিক্ষণ ও প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। আমরা তারেক রহমানের নির্দেশ পালন করি বলেই করছি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই প্রশিক্ষণ সমাবেশের আমরা সবাই পদছাড়া, অনেকেই বহিষ্কৃত নেতা। জেলা বিএনপির এইটিই টার্ন পয়েন্ট। রাজনীতির পথ যেন আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি এই যে বৈষম্য। এই বৈষম্য আর থাকবে না। কারণ তারেক জিয়া দেশে আসতেছেন। সন্ত্রাস, ভূমিদস্যু কেউ থাকতে পারবেন না। কেউ টিকতে পারবেন না। এটা জিয়াউর রহমানের দল। এটা খালেদা জিয়ার দল। এটা তারেক রহমানের দল। সবাই একাকার হয়ে তারেক জিয়ার রাজনীতি করতে হবে।
জামালপুরে ৩১ দফার প্রচারণা প্রসঙ্গে শামীম আহমেদ বলেন, প্রায় বছর খানেকের বেশি সময় হবে আমরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে প্রথম এই রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, গণসংযোগের মাধ্যমে আমরা শুরু করে দিয়েছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় জামালপুর শহরে ব্যাপকভাবে প্রচার করেছি। আমরা সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। জামালপুর জেলার সাতটি উপজেলা ও আটটি পৌরসভায় যাওয়ার চেষ্টা করেছি। সাতটি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের এই ৩১ দফা প্রচারণায় দেশনায়ক তারেক রহমান অনেক চিন্তা করে এবং মেধা দিয়ে ৩১ দফা জাতির সামনে উপস্থাপনা করেছেন। এই যে সংস্কার সংস্কার। ৫ তারিখের আগে শুনেছেন? শুনেন নাই। এই সংস্কার ৫ তারিখে অর্থাৎ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার যখন ভারতে পালিয়ে যায়। যখন রাষ্ট্র শাসন শূন্য হয়ে যায়। তখন থেকে যখন উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়। এরপর থেকেই রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তারাও উচ্চারণ করলেন। কিন্তু আমার নেতা, আপনাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, শেখ হাসিনা পলায়ন করার আগেই উনি এই সংস্কার এবং রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে তিনি আগেই ঘোষণা দিয়ে ছিলেন।
শামীম আহমেদ বলেন, আগে ২৭ দফা ছিল। এইটা আরও চিন্তা চেতনা এবং বিভিন্ন সেক্টরের সাথে কথা বলে ৩১ দফা সর্বশেষ ঘোষণা দিয়েছেন। কথা পরিষ্কার। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এই নির্বাচনে জাতির সামনে যেভাবে আমার নেতা, বিএনপির নেতা তথা ১৮ কোটি মানুষের নেতা তারেক রহমান উপস্থাপনা করেছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শহীদ জিয়ার যারা সৈনিক। যারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক। আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানের সৈনিক, তারা সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে এই ৩১ দফাকে সামনে রেখে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষের দ্বার প্রান্তে ধানের শীষে ভোট চাওয়ার জন্য যাবেন ইনশাআল্লাহ।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান জিলানীর সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণ চন্দ্র মন্ডল, সাবেক ভিপি মনোয়ার হোসেন নিয়ন, মেলান্দহ পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জামালপুর ইউনিটের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম লিয়ন, মেলান্দহ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজম খান, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলনেতা মনির হোসেন, জেলা সংগ্রামী দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশিক রায়হান পারভেজ, জিয়া সাইবার ফোর্সের সদস্য সচিব রিপন হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মুরাদ ফকির, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রানা ম্যানশন, কামরুল হাসান কাবুল, বর্তমান কমিটির প্রচার সম্পাদক রমিজ রাজা প্রমুখ।
আলোচনা শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের চিত্র প্রজেক্টের মাধ্যমে দেখানো হয়। ৩১ দফা বাস্তবায়ন প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিএনপি ও সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিপুল সংখ্যক সাধারণ জনতা এতে অংশ নেন।
মো. আলমগীর : নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর, বাংলারচিঠিডটকম 


















