হিটলারের লাশ উত্তোলন করলো ম্যাজিস্ট্রেট

লিটন মিয়া ওরফে হিটলারের লাশ উত্তোলন করা হয়। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে লিটন মিয়া ওরফে হিটলারের লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট। আদালতের নির্দেশে ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামে ওই ব্যক্তির কবর থেকে লাশ তোলা হয়। হিটলার পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন।

এর আগে আদালতের নির্দেশ পাওয়া পর্যন্ত লাশ চুরির ভয়ে দেড়মাস হিটলারের কবরস্থান পাহাড়া দেয় স্বজনরা।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, কান্দাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গত ২ অক্টোবর রাতে লিটন মিয়া ওরফে হিটলারকে ডেকে নিয়ে যায় শহিদুল ইসলাম শুভ ও তার সহযোগীরা। এর পরদিন সকালে স্থানীয় মসজিদের সামনে পাওয়া যায় হিটলারের মরদেহ। পরে অভিযুক্ত আসামিরা হিটলার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার করে তড়িঘরি লাশ দাফন করে। পরবর্তীতে খবর মিলে জমি নিয়ে বিরোধের কারণেই পার্শ্ববর্তী শহিদুল ইসলাম শুভ ও তার অনুসারীরা হিটলারকে হত্যা করে মসজিদের সামনে লাশ ফেলে যায়।

এরপর হিটলারের ভাতিজা আবির ইসলাম শহিদুল ইসলাম শুভসহ সাতজনকে আসামি করে ৩০ অক্টোবর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে শেরপুর সদর থানা পুলিশকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় আদালত।

পরে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত হিটলারের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ১৩ ডিসেম্বর ওই লাশ তোলা হয়।

এসময় এলাকার হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

এদিকে লাশের ময়নাতদন্ত করে প্রাপ্ত রিপোর্টের আলোকেই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সূত্র জানায়, হত দরিদ্র হিটলার তিন কন্যা সন্তান রেখে মারা যায়। স্ত্রী তাছলিমা বেগম অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে সন্তানদের নিয়ে।

নিহতের স্ত্রী তাছলিমা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে আসামিরা হত্যা করেছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে এতদিন আমাদের মামলা করতে দেয়নি।

মামলার বাদী ও নিহতের বড় ভাইয়ের ছেলে আবির ইসলাম বলেন, চাচাকে জমি নিয়ে বিরোধের কারণেই শুভ, মতিন গংরা ডেকে নিয়ে খুন করে। পরে লাশ মসজিদের সামনে ফেলে রেখে যায়। মামলার পর থেকে চাচার লাশ চুরি করবে, এমন হুমকি পেয়ে আমরা দেড়মাস চাচার কবরস্থান পাহাড়া দিয়েছি।

সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকতা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, আদালতের নির্দেশে লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে। এখন ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।