‘মাসুদ রানা’র স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন আর নেই

কাজী আনোয়ার হোসেন

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ জনপ্রিয় থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’র স্রষ্টা এবং সেবা প্রকাশনীর প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেন আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

তিনি ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর শাহবাগে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। কাজী আনোয়ার হোসেন মৃত্যুকালে এক মেয়ে ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য পাঠক, গুণগ্রাহী, স্বজন ও শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন।

কাজী আনোয়ার হোসেনের পুত্রবধূ মাসুমা মাইমুর বাসসকে জানান, গত ৩১ অক্টোবর কাজী আনোয়ার হোসেনের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়ে। চতুর্থ পর্যায়ে থাকা এই ক্যান্সার তার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপর তার ব্রেইন ষ্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক হলে তাকে গত ১০ জানুয়ারি তাকে বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তিনি ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

কাজী আনোয়ার হোসেন ষাটের দশকের মধ্যভাগে জনপ্রিয় ‘মাসুদ রানা’ চরিত্র সৃষ্টি করেন। এরআগে ‘কুয়াশা’ নামে আরেকটি জনপ্রিয় চরিত্রের সৃষ্টি করে পাঠক সমাজে সুনাম অর্জন করেন। সেসময় ‘বিদ্যুৎ মিত্র ও শামসুদ্দীন নওয়াব’ ছদ্মনামে বই লিখতেন তিনি। ‘মাসুদ রানা’ চরিত্রটি পাঠক সমাজে এতই সমাদৃত হয় যে তা পরবর্তীতে এই সিরিজের প্রায় ৪ শতাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার হিসেবে বাংলাদেশে ‘পেপারব্যাক’ বই প্রকাশের মাধ্যমে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছিল তার মাধ্যমেই।

কাজী আনোয়ার হোসেন ১৯৩৬ সালের ১৯ জুলাই ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রথিতযশা বিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও সাহিত্যিক কাজী মোতাহার হোসেন ও সাজেদা খাতুনের ছেলে কাজী শামসুদ্দিন আনোয়ার হোসেন নবাব লেখালেখির জগতে কাজী আনোয়ার হোসেন নামেই খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক, লেখক, অনুবাদক ও প্রকাশক। তিনি ১৯৫২ সালে সেন্ট গ্রেগরি স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর আইএ এবং বিএ পাস করেন জগন্নাথ কলেজ থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬১ সালে বাংলা সাহিত্যে স্নাতোকোত্তর করেন। কারো কাছে গান না শিখলেও কাজী আনোয়ার হোসেন ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বেতারের বেতারের তালিকাভূক্ত সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন। তার তিন বোন সন্জীদা খাতুন, ফাহমিদা খাতুন ও মাহমুদা খাতুন রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী।

কাজী আনোয়ার হোসেনকে শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী আগামীকাল বাদ যোহর বনানীতে তার মায়ের কবরস্থানে দাফন করা হবে।সূত্র:বাসস।