বকশীগঞ্জে রোপা আমনে পোকার আক্রমণ

বকশীগঞ্জে রোপা আমনের ক্ষেতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু, বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমের রোপা আমনের ক্ষেতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

রোপা আমনে পোকার আক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার করেও পোকা দমন করা যাচ্ছে না। ফলে কৃষকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বকশীগঞ্জ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১২ হাজার ৭১২ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৬ হাজার ৭৬০ হেক্টর, উফশী জাত ৫ হাজার ৫৫২ হেক্টর ও স্থানীয় জাত ৪০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বকশীগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে বন্যা হয়। বন্যায় ৪ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন পানিতে নিমজ্জিত হয়।

রোপা আমনের ক্ষেত থেকে পানি নেমে গেলে কিছু দিন পর থেকে এসব ক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বন্যা কবলিত সাধুরপাড়া, বগারচর, মেরুরচর ও নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের রোপা আমন ক্ষেতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। পোকার আক্রমণ অব্যাহত থাকলে এবারের রোপা আমন চাষে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বকশীগঞ্জে রোপা আমনের ক্ষেতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

স্থানীয় কৃষকরা জানান, পোকার আক্রমণে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তারা বিভিন্ন বালাইনাশক ব্যবহার করেও পোকা দমন করতে পারছেন না।

সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বিলের পাড় গ্রামের কৃষক লালচান মিয়া জানান, এবছর পোকার আক্রমণ ব্যাপকভবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

নিয়মিত বালাইনাশক ব্যবহার করলেও কোন কাজ হচ্ছে না। ফলে তারা অনেকটায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।

অপরদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় স্যালো মেশিন দিয়ে ক্ষেতে পানি দেওয়া হচ্ছে। ফলে পোকা দমন করতে ও পানি দিতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হচ্ছে ।

উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তাগণ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করলেও জনবল সংকটের কারণে সব এলাকায় তারা যেতে পারছেন না। সীমিত জনবল দিয়ে কৃষক পর্যায়ে সেবা পৌঁছানো তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বকশীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ অনুপ সিংহ জানান, মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো রোগ দমনে উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছেন। কৃষকরা একটু সচেতন হলেই এসমস্যা আর থাকবেনা।