দেওয়ানগঞ্জে বন্যায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি

বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় পঁচে গলে যাওয়া রোপা আমন ধান ক্ষেত পরিষ্কার করছেন একজন কৃষক। ছবিটি ১৩ সেপ্টেম্বর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী থেকে নেয়া। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মদন মোহন ঘোষ, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় সম্প্রতি বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টাকার অংকে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা। রোপা আমন ধানের চারার ক্ষেত পঁচে গলে গেছে। বন্যায় ধানের চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভাসহ চুকাইবাড়ী, চিকাজানী, বাহাদুরাবাদ, হাতীভাঙ্গা, চর আমখাওয়া, ডাংধরা ৮ ইউনিয়নেই বন্যায় কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় দীর্ঘ খরা ছিল। অবস্থা সম্পন্ন কৃষকরা শ্রাবণ মাসেই স্যালো মেশিনের সেচের পানি দিয়ে রোপা আমনের চাষ করেছিলেন। বর্গা ও ক্ষুদ্রচাষীরা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করে এবং বন্যার ভয়ে বিলম্ব করে ভাদ্র মাসে ধানের চারা রোপণ করেন। তাদের ধারণা ছিল এ বছর আর বন্যা হবে না।

চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের বর্গাচাষী আলতাফ জানান, তিনি কষ্ট করে ধার দেনা করে রোপা আমন চাষ করেছিলেন। শ্রাবণ মাসে পাট ভেজানোর পানি ছিল না। খালবিলও ছিল শুকনো। কিন্তু ভাদ্রের শেষে নদীতে পানি বেড়ে হঠাৎ বন্যা সৃষ্টি হওয়ায় তার ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যায়। বন্যার পর প্রচন্ড তাপদাহ থাকায় ক্ষেতের ধানের চারা পঁচে গলে গেছে। বৃষ্টি হলে রক্ষা পেত।

স্থানীয় পানি বিজ্ঞান কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছর ২৮ আগস্ট থেকে বন্যা শুরু হয়ে শেষ হয় ৬ সেপ্টেম্বর।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেওয়ানগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১০ হাজার ৩৭৫ জন। বন্যায় নিমজ্জিত ফসলি জমির পরিমাণ ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ ১ হাজার ৬০০ হেক্টর। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ ১ হাজার ৯০০ হেক্টর। আংশিক ক্ষতির হার শতকরা ২৫ ভাগ। আংশিকসহ মোট ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রোপা আমন ধান উৎপাদন হত ৩ হাজার ৩১ মেট্রিকটন। প্রতি কেজি ৪০ টাকা হিসাবে যার মূল্য দাঁড়ায় ১২ কোটি ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মদন মোহন ঘোষের সাথে আলাপ কালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিবেদন এবং প্রণোদনার জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে এবং কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শীতকালিন ফসল উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।