শেরপুরে বালু উত্তোলনের ইজারা বাতিল চেয়ে মানববন্ধন

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রদানকৃত ভোগাই ও চেল্লাখালি নদীর বালু উত্তোলনের ইজারা বাতিল চেয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে। ১১ এপ্রিল সকালে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে নালিতাবাড়ী সুধী সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে ইউএনও’র মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরবার একটি লিখিত আবেদনও দেওয়া হয়।

এ দিন মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন এম এ হাকাম হীরা, বিপ্লব দে কেটু, মান্নান সোহেল, শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম খোকন, রবিউল ইসলাম, প্রিন্সিপাল মনিরুজ্জামান, মনিরুল ইসলাম মনির, মনিরুজ্জামান মনির, কালাচান পাল, শিক্ষার্থী দোহা বৃষ্টি, মেজবাহুল হক, দীপ্ত সাহা, মাহমুদুল হাসান, রাজনীতিবিদ বিধান সরকার শিবু, তোফাজ্জল হোসেন রানা, মানিক সাহা, তমাল দেবনাথ, সাগর ও হযরত আলী প্রমুখ।

বক্তরা বলেন, ভোগাই ও চেল্লাখালীর মূল নদীতে এখন আর বালু নেই। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে নদী তীর ভেঙ্গে ও গর্ত করে বালু উত্তোলন করে আসছে। এছাড়া নদীর তলদেশ গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করার ফলে নদীর দুই তীর ধসে পড়ছে। ফলে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, বাজার, স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও মন্দির ভাঙনের মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে বালু চাপা পড়ে রিপন মিয়া (৩৫) নামে এক শ্রমিক মারা গেছে। এমতাবস্থায় নদীর নাব্যতা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদীর প্রকৃত অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত ইজারা বন্ধের দাবি জানান তারা।

অন্যদিকে জেলা প্রশাসক বরবার লিখিত আবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি অতিপয় বালু খেকো নদী তীরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের পাইল্যাপ ধসে গেছে এবং ভোগাই নদীর উপর নির্মিত নাকুগাঁও ব্রিজের উপর দিয়ে ৫০-৬০টন ধারন ক্ষমতাসম্পন্ন বালু ভর্তি ১০ চাকার ট্রাক চলাচল করায় ব্রিজের ছাদ ভেঙ্গে গেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ভোগাই নদীর উপর নির্মিত ব্রিজ ও রাবারড্যাম ব্রিজটিও যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই তারা নদী বাঁচাতে ও নালিতাবাড়ী বাঁচাতে ইজারা বাতিল চান।

এ সম্পর্কে নালিতাবাড়ীর ইউএনও হেলেনা পারভীন বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট তা পৌঁছে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৫ মার্চ জেলা প্রসাশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বালু উত্তোলনের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। আর ৮ এপ্রিল ৯০ লাখ টাকা দরে আগামী এক বছরের জন্য মা এন্টার প্রাইজ ভোগাই নদীর ইজারা পান। সেই সাথে ৯৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা দরে আগামী এক বছরের জন্য মর্তুজা এন্টার প্রাইজ নামে আরো একটি প্রতিষ্ঠানকেও ইজারা দেওয়া হয়।