নকলায় নতুন জাতের বীজ আলুর বাম্পার ফলনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা

সানসাইন জাতের আলু

শফিউল আলম লাভলু, নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

দেশে আরও নতুন জাতের গোল আলুর মধ্যে সানসাইন জাতের আলুর চাষের সফলতা এসেছে শেরপুরের নকলা উপজেলায়। নতুন জাতের এই আলু চাষ করে কম সময়ে বেশি ফলন পাওয়া যায়। অন্য কৃষকরাও এই আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)-এর আওতায় নকলা জোনে চলতি মৌসুমে রোপণকৃতবীজ আলুর ফলন দেখে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। এদিকে বিএডিসি বলছেন আমরা মাঠ পরিদর্শনসহ নিয়মিত চাষীদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এ জাতের আলু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জন বেশি হয়েছে এবং বিদেশেও রপ্তানিকরাও সম্ভব এই আলু।

নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ও নারায়নখোলা ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র চরে কুইন অ্যানি আটাডো, গ্র্যানোলা, ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, এস্টারিক্সসহ ২০টি জাতের বীজ আলু চাষ হয়। এর মধ্যে নতুন ১৬টি জাত নকলা জোনের মত আরও ১৩টি জোনে প্রথম প্রদর্শনীতে নিয়ে আসে বিএডিসি। এর বেশ কয়েকবছর যাবৎ ফলন বেশি হয়ে আসছে। এবছর সানসাইন জাতের বীজ আলু কৃষকদের মাঝে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদনও অনেক বেশি। অন্যান্য কৃষকদেরও আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে আলু চাষের। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৯টি ব্লকে চুক্তিবদ্ধ ৩৬ কৃষকসহ অর্ধশতাধিক আলু চাষীকে নির্বাচন করে বীজআলু উৎপাদনের লক্ষ্যে ২৭০ একর জমিতে এবং রপ্তানি করার লক্ষ্যে আরও ৩০ একর জমিতে বিএডিসি’র আওতায় আলু চাষ করা হয়েছে। এসকল জমিতে প্রতি একরে ১ মেট্রিকটন হারে মোট ৩০০ মেট্রিকটন বিএডিসির বীজ রোপণ করা হয়। আবহাওয়া আলু চাষের পুরোপুরি অনুকূলে থাকায় বীজ আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ হাজার ৫২১ মেট্রিকটন থেকে ১ হাজার ৬০৭ মেট্রিকটন অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বীজ আলু চাষীরা জানান, বিএডিসি’র নিয়মিত পরামর্শ পেয়ে আমরাও বীজ আলু করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছি। আগামীতে আরও বেশি এজাতের আলু চাষ করব। শুনেছি এ বছর আলু নাকি বিদেশ যাবে। আমাদের লাগানো আলু যদি বিদেশ যায় তাহলে সেটা আমাদের সুনাম এবং দেশের সুনাম। বয়ে আনবে বৈদাশিক মুদ্রা।

আলু বাছাই কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরাও ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন। আলু বাছাইয়ের কাজ করে সংসারে বাড়তি আয় হচ্ছে তাদের। প্রতিবছরের এই সময় বিএডিসি’র হিমাগারে আলু বাছাইয়ের কাজ করে থাকেন।

বিএডিসি’র আওতায় কৃষকের উৎপাদিত আলু গ্রেডিং করার পর সরকারের নির্ধারিত মূল্যে কিনে নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করা হবে। পরে হিমাগারে সংরক্ষিত ওই আলুবীজ সরকারের নির্ধারিত মূল্যে কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়। তাতে ভালোমানের আলুবীজ কিনা এবং তাদের উৎপাদিত আলু সরকারের কাছে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করায় বিএডিসির আলু চাষীরা দুই দিকেই লাভবান হবেন।

বিএডিসি হিমাগারের উপপরিচালক (টিসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গুণগত মানসম্পন্ন বীজআলু উৎপাদনের লক্ষ্যে বিএডিসি আলুর বিভিন্ন ব্লক পরিদর্শনে গিয়ে চাষীদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি এবং মাঠ দিবসের মাধ্যমে প্রদর্শনী প্লট স্থাপন ও মাল্টি লোকেশন পারফরমেন্স যাচাইসহ উৎপাদিত এই আলু বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। তাই আমরা এ বছর বিদেশে এই জাতের আলু রপ্তানি করব।