শেরপুরে পুলিশ পরিচয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ফিল্মি কায়দায় ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাই

ভুক্তভোগী নূর হোসেন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরে পুলিশ পরিচয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ফিল্মি কায়দায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র সেতুর ইজারাদারের ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ওই ইজারাদারের নাম নূর হোসেন। এ সময় ছিনতাইকারিরা তার চোখে মুখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেয়। এর ফলে তিনি আহত হন। ২১ মার্চ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের মধ্যশেরী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নূর হোসেন সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের সাতপাকিয়া গ্রামের মৃত. ইসমাইল হোসেনের ছেলে।

বিকালে এ খবর লেখার সময় পর্যন্ত এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।

ছিনতাইকারিরা নূর হোসেনের ভাতিজা লিটনকে তার মোটরসাইকেলের স্টিয়ারিংয়ের সাথে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে আটকে ফেলে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

ভুক্তভোগী নূর হোসেন বলেন, দুপুরে সাতপাকিয়া থেকে ভাতিজা লিটনকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে সরকারি ইজারার ১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার মধ্যে শেষ কিস্তির ৩৫ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে ন্যাশনাল ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য শহরে যাচ্ছিলেন। এসময় শহরের মধ্যশেরী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি মোটর সাইকেলে থাকা পাঁচ ছিনতাইকারি তাদের গতিরোধ করে। এ সময় তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। পরে ছিনতাইকারিরা ভাতিজা লিটনকে তার মোটরসাইকেলের স্টিয়ারিংয়ের সাথে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে আটকে ফেলে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তার (নূর হোসেন) চোখে মুখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দিয়ে হাতে থাকা ব্যাগে ৩৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা জামালপুরের দিকে চলে যায়। পরে তার আরেক ভাতিজা আনিসুর রহমান তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

ভাতিজা লিটন বলেন, ছিনতাইকারিরা প্রথমে পিস্তল বের করে ভয় দেখায়। এর পরপরই হ্যান্ডকাফ বের করে তার হাতে পরিয়ে মোটরসাইকেলের স্টিয়ারিংয়ের সাথে আটকে দেয়। পরবর্তীতে ছিনতাইয়ের পুরো কাজ শেষ করে দুর্বৃত্তরা।

ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এটি একটি অনভিপ্রেত ঘটনা উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ঘটনাটি থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে ভালোভাবে অবগত হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি অতি দ্রæত সময়ের মধ্যে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ভুয়া পুলিশের তৎপরতা রয়েছে। তাদের কাছে পুলিশের অনেক ইকুইপমেন্ট যেমন ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডকাফও আছে। এটি একটি ভুয়া পুলিশের তৎপরতা হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। ভুয়া পুলিশের তৎপরতাও সমূলে উৎপাটনের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।