একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

১৯ জানুয়ারি জামালপুরে উদযাপিত হয়েছে শহীদ জননী মহিয়সী নারী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে পরিচালিত ও প্রতিষ্ঠিত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি জামালপুর জেলা শাখা এ উপলক্ষে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, নাটক মঞ্চায়ন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এদিন সন্ধ্যায় জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী কবি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন এ দেশের নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের বন্ধু। একটি দেশের মুক্তির জন্য, একটি দেশের স্বাধীন ভূ-খন্ডের জন্য পঞ্চান্ন বছর বয়সী সেই মানুষটি পাকিস্তানী শাসকদের জেলজুলুম-অত্যাচারকে প্রতিরোধ করে একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। তার জন্মশতবর্ষ উদযাপনে বাঁধা দিতেই ভাস্কর্যবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল পাকিস্তানের দালালরা নানান অপতৎপরতা চালাচ্ছে।

একাত্তরের ঘাতক দালাল স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচারের দাবিতে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যেমন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানান তিনি।

বর্ণচোর নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি জামালপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মুক্তা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি জেলা শাখার সদস্য সচিব মো. হাফিজুর রহমান আকবর। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, সহ-সভাপতি আবু জাফর আহাম্মদ শীশা, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক মো. আমিনুল ইসলাম, চিকিৎসক ইকরামুল হক হিটলু তালুকদার, জেলা পরিষদ সদস্য আওয়ামী লীগনেতা নাঈম রহমান, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি জেলা শাখার সদস্য পরিতোষ পণ্ডিত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক জনি প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি জেলা শাখার সদস্য মো. খলিলুর রহমান।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক সংগঠন ভোর হলো’র পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন আইনজীবী মো. সোলায়মান, কবিতা আবৃত্তি করেন জনপ্রিয় আবৃত্তিকার দেবজ্যোতি সেনশর্মা এবং নৃত্য পরিবেশন করেন অন্তর, হৃদয় ও আরিফ।

নৃত্য পরিবেশনার একটি দৃশ্য। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

পরে অমৃত থিয়েটারের পরিবেশনায় মমতাজ উদ্দীন আহমদ রচিত নাটক ‘বর্ণচোর’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়সহ নির্দেশনায় ছিলেন নাট্যাভিনেতা মুক্তা আহমেদ। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাট্যাভিনেতা বাহা উদ্দিন, আর আই রাসেল, রেশমী, নাজমুল, মেহেদী হাসান, সুজন, সাব্বির প্রমুখ। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পাকহানাদার বাহিনী ও দালাল রাজাকার আলবদরদের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা-জনতার প্রতিরোধের চিত্র তোলে ধরা হয় এই নাটকে।

এর আগে বিকেলে শহরের দয়াময়ী মোড় থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা শেষে বকুলতলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান সংগঠনটির কর্মকর্তা ও সদস্যরা।