যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম চালান পাঠানো শুরু করেছে মার্কিন সরকার

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑  নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা যখন তিন লাখ পার হয়ে গেছে, সে সময়ই দেশটিজুড়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম চালান পাঠানো শুরু করেছে মার্কিন সরকার।

দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়ার পর ১৪ ডিসেম্বর থেকে মার্কিন জনগণ ফাইজার-বায়োএনটেকের এই ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচি। বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।

প্রথম দফায় চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং নার্সিংহোমে থাকা বাসিন্দাদের ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। দ্রুত পরিবহন করা এই টিকাদান কার্যক্রমের মূল বিষয়, কারণ এটি অত্যন্ত স্বল্প তাপমাত্রায় (মাইনাস ৯৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রাখতে হয়।

স্থানীয় সময় ১৩ ডিসেম্বর সকালের দিকে কোনো সময় অপচয় না করেই ফাইজারের কর্মীরা ভ্যাকসিনের বোতলগুলো বাক্সে রেখে প্যাকেজগুলো স্ক্যান করার পরপরই তা বরফ (ড্রাই আইস) দিয়ে ফ্রিজারে সংরক্ষণ করেন।

এরপর ভ্যাকসিনগুলো নেওয়া হয় মিশিগানে অবস্থিত ফাইজারের পোর্টেজে। মিশিগান থেকে তা দ্রুত নেওয়া হয় জেরাল্ড আর ফোর্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সেখান থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে প্রথম রওনা দেয় কার্গো বিমান।

ফাইজারের এ ভ্যাকসিন সরবরাহের কাজে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডএক্স এক্সপ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড স্মিথ বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক দিন’। দেশজুড়ে বিভিন্ন বিতরণ স্থানে ভ্যাকসিনের কমপক্ষে ৬৩০টি প্যাকেজ সরবরাহ করছে ফেডএক্স।

চলতি সপ্তাহান্তেই ভ্যাকসিনের প্রথম ৩০ লাখ ডোজ যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্যে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন রিচার্ড স্মিথ।

মার্কিন ফেডারেল কর্মকর্তারা জানান, ফাইজারের ভ্যাকসিনের প্রথম চালানটি সোমবার ১৪৫টি, মঙ্গলবার ৪২৫টি এবং বুধবার বাকি ৬৬টি বিতরণকেন্দ্রে পৌঁছাবে।

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য, কানাডা, বাহরাইন ও সৌদি আরবে অনুমোদন পেয়েছে ফাইজারের এই ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিনটির জরুরি ব্যবহারও শুরু করেছে যুক্তরাজ্য।

চিকিৎসক, বয়স্ক নাগরিক ও নার্সিংহোমে থাকা বাসিন্দাদের পর আগামী জানুয়ারি থেকে দেশটির সাধারণ মানুষের মাঝে ভ্যাকসিন বিতরণ করা হতে পরে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কোভিড-১৯ থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষার জন্য প্রথমবার টিকা গ্রহণকারীদের কিছুদিন পর দ্বিতীয় ডোজও নিতে হবে।

ফাইজার জানায়, ২১ দিনের ব্যবধানে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনটির দুটি ডোজ দেওয়া হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজটি একটি বুস্টার ডোজ। প্রথম ডোজটি দেওয়ার পর থেকেই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হতে শুরু করে এবং দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার সাতদিন পর এটি সম্পূর্ণ কার্যকর হয়।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত এক কোটি ৬৭ লাখ ৩৭ হাজার ২৬৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মোট তিন লাখ ছয় হাজার ৪৫৯ জন মারা গেছে।