অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার, গাছে বেঁধে রাখা ধর্ষককে র‌্যাবে দিল গ্রামবাসী

ধর্ষণকারী খলিলুরকে হাতে নাতে ধরে গাছে বেঁধে রাখে গ্রামবাসী। পরে র‌্যাব তাকে উদ্ধার ও আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ছবি : বাংলারচিটিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

খলিলুর রহমান পেশায় কাঠমিস্ত্রি, পরিচয় গোপন করে ঢাকায় কোম্পানির চাকরির করার কথা বলে মোবাইলে প্রতিবেশী অষ্টম শ্রেণির একছাত্রীর সাথে পাতেন প্রেমের ফাঁদ। অতঃপর ২ নভেম্বর রাতে ওই ছাত্রীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণের অভিযোগে হাতেনাতে ধরা খেলেন তিনি। এলাকাবাসী তাকে ধরে সারারাত এবং ৩ নভেম্বর দুপুর পর্যন্ত গাছের সাথে বেঁধে রেখে র‌্যাব ও পুলিশে খবর। জামালপুর সদর উপজেলার রশিদপুর ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ওই ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জামালপুর সদর উপজেলার রশিদপুর ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া গ্রামে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী সাধারণ এক কৃষক পরিবারের মেয়ে। তাদের বাড়ি থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে পাশের গ্রাম আলীনগরের আব্দুস সামাদের ছেলে খলিলুর রহমান (৩০) পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। কিন্তু মোবাইল ফোনে তার পরিচয় গোপন করে নিজেকে ঢাকায় একটি কোম্পানিতে ২৬ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করার কথা বলে ওই ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন। ওই ছাত্রী প্রথম প্রথম তার ফোনে সাড়া না দিলেও একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ফোনে কথাবার্তা চলছিল। প্রায় তিনমাস ধরে চলে এই সম্পর্ক। কিন্তু কেউ কাউকে দেখেনি কখনো। খলিলুর রহমান বিবাহিত এবং এক সন্তানের জনক।

২ নভেম্বর রাতে ওই ছাত্রীর স্বজনরা কেউ বাড়িতে না থাকার সুযোগে রাত ৯টার দিকে খলিলুর রহমান ওই ছাত্রীর বাড়িতে যান। কিছু বুঝে উঠার আগেই খলিলুর রহমান ওই ছাত্রীর মুখচেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করছিলেন তাকে। এমন সময় ওই ছাত্রীর এক মামা ঘরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ডাকচিৎকার এবং ঘরের টিনে জোরে শব্দ হচ্ছে টের পেয়ে ঘরে ঢুকে তার ভাগ্নিকে ধর্ষণ করতে দেখতে পান। এ সময় ধর্ষণকারী খলিলুর রহমান পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে অন্যান্য প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে তাকে হাতেনাতে আটক করে কিছু মারধর করেন। পরে তাকে বাড়ির পাশে আমগাছের সাথে সারারাত বেঁধে রাখা হয়। রাত পোহালে ৩ নভেম্বর সকালে ঘটনা জানাজানি হলে বিপুল সংখ্যক লোক ওই বাড়িতে ভিড় করেন।

খবর পেয়ে ৩ নভেম্বর দুপুরে র‌্যাবের জামালপুর ক্যাম্পের একদল র‌্যাব সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছে বাঁধা খলিলুর রহমানকে উদ্ধার ও আটক করে র‌্যাব ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল লতিফ পুলিশ ফোর্স নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে ধর্ষণের কিছু আলামতও জব্ধ করেন। একই সাথে থানায় অভিযোগ করানো এবং মেডিক্যাল পরীক্ষাসহ পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে সদর থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ ।

র‌্যাব-১৪ জামালপুর ক্যাম্পের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রামবাসীর হাতে আটক খলিলুর রহমানকে সেখান থেকে উদ্ধার করে র‌্যাব ক্যাম্পে আনা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী তাকে ধর্ষণের অভিযোগে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। মামলা দায়েরের পর আটক খলিলুর রহমানকে থানায় হস্তান্তর করা হবে।