শেরপুরে বন্যার্তদের সেবায় ৫৮ মেডিকেল টিম গঠন, মৃত্যু ১৭

বন্যার্তদের সেবায় মেডিকেল টিম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

বন্যায় পানিবাহিত রোগের চিকিৎসা সেবা দিতে ৫৮টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে শেরপুর স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই মেডিকেল টিমের চিকিৎসকরা এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ রোগীকে সেবা দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন চিকিৎসক আনোয়ারুর রউফ বলেন, বন্যার্তদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল টিমগুলো বন্যা কবলিত এলাকার আশপাশে স্থাপন করা হয়েছে। চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত ৩৩২জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছে। আর ডায়রিয়ার প্রকোপ রুখতে বন্যার্তদের মাঝে ৫০ হাজারটি খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে। এবং দুই হাজারটি পানি বিশুদ্ধকরল বড়ি বিতরণ করা হয়।

জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর বিভিন্ন ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে পানিতে ডুবে মারা গেছে ১২ জন, সাপের কামড়ে তিনজন এবং বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

সিভিল সার্জন বলেন, সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার করছেন না। অন্যদিকে বন্যার পানি দর্শনার্থীদেরও মাস্ক পড়তে দেখা যায়নি। তাই জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে করোনা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এলাকায় এলাকায় মাইকিং করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া সিভিল সার্জন, শেরপুর ফেসবুক পেইজে জনসাধারণকে মাস্ক পরিধানে উদ্ব্দ্ধু করা হচ্ছে।

২৯ জুলাই সকালে পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসএই) জিয়াসমিন খাতুন জানান, সদর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর চেল্লাাখালি, ভোগাই ও নাকুগাঁও নদীর পানি এখনও বিপদসীমার নিচে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকার ৩০টি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আর অবিরাম বৃষ্টি এবং পাহাড়ী ঢলে জেলার অন্য নদ-নদীগুলোর পানি না কমায় পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় লাখো মানুষ। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন। গত ১৩ দিন যাবত বন্যার পানি স্থায়ী হওয়ায় ১১শ’ হেক্টর জমির ফসল পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রকম পানিবাহিত রোগ বালাই।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওয়ালিউল হাসান বলেন, বন্যার্তদের সহায়তায় ১৫০ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও বরাদ্দ চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।