ইউএনও’র বিরুদ্ধে মামলার হুমকি অবৈধ দখলদারদের!

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় অবৈধ দখলে থাকা তিন কোটি মূল্যের সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। ২০ জুলাই দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রাজনগর ইউনিয়নের টেংরাখালি মোড় থেকে ৪টি ঘরের ২৪টি দোকানঘর উচ্ছেদের মাধ্যমে ওই জমি উদ্ধার করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ দখলদাররা সেখানে দীর্ঘদিন যাবত দোকানপাট খুলে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো। এ অবস্থায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হওয়ায় দখলদাররা উল্টো ইউএনও’র বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিচ্ছে।

এ হুমকির বিষয়টি নিয়ে ইউএনও তার ব্যক্তিগত ও ইউএনও নালিতাবাড়ী ফেসবুক আইডিতে এ সংক্রান্ত একটি পোস্টও দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ওই স্থানে আরোপিত স্টেটাসকো মিস আপীল মোকদ্দমা নং ০৫/২০২০ এর প্রেক্ষিতে স্থগিত হয়। এখন সেখানে রাজনগর ভূমি অফিস নির্মাণ করা হবে।

অন্যদিকে অবৈধ দখলদার মাহবুবুর রহমান মিলন ও তার সহযোগীদের দাবি, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত রাজনগর মৌজায় ৪৫ শতাংশ জমিতে ৩০ বছর আগে থেকে ভোগদখল করে আসছেন। একই দাগে ২৫ শতাংশ সরকারি জমি রয়েছে। ওই জমিতে ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের জন্য প্রস্তুতি নেয় সরকার। সরকারি জমি উন্মুুক্ত থাকলেও তাদের দখলীয় জমির দিকে দৃষ্টি দেয় ভূমি প্রশাসন। এ নিয়ে জমির উপর চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে নালিতাবাড়ীর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে সম্প্রতি একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত ৪৫ শতাংশ জমির উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। পরবর্তীতে ভূমি প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা বাতিল চেয়ে আপিল করেন। এর প্রেক্ষিতে ১৫ জুলাই আদালত নিষেধাজ্ঞার আদেশটি স্থগিত করেন। ভূমি প্রশাসন মামলার স্থগিত আদেশ পেয়েই তাদেরকে কোন প্রকার নোটিশ না দিয়েই জমির ওপর থাকা স্থাপনাগুলো গুড়িয়ে দেয়।

ইউএনও আরিফুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে রাজনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জায়গা অবৈধ দখলকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই জমির বর্তমান বাজার মূল্য আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা। এখন সেখানে ভূমি অফিসের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ইটের গাথুনি দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়।

অবৈধ দখলদারদের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের (অবৈধ দখলদার) বসতবাড়ি না দোকান ছিলো এটা জনগন সাক্ষী এবং ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। কয়েকদিন আগেই উচ্ছেদের বিষয়ে তাদেরকে অবহিত করা হয়।

আল্লাহকে ভয় এবং তার উপর ভরসা করেই চাকরি করছি। কোন মামলার ভয়ে সরকারি স্বার্থ উদ্ধারে পিছপা হবেন না বলে তিনি দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ করেন।