সরিষাবাড়ীতে ১৬৭২ জন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক কর্মচারীর মানবেতর জীবন যাপন

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৬ মার্চ হতে সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে শিক্ষক কর্মচারীসহ সকল শ্রেণির মানুষ। একমাত্র আয়ের উৎস যাদের শিক্ষার্থীর বেতন সেই কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক ও কর্মচারীদের জীবন অতিবাহিত হচ্ছে অনেকটা অর্ধাহারে। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া এসব শিক্ষক ও কর্মচারীদের পাশে এগিয়ে আসেনি কেউ। তাই অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছে তাদের পরিবার।

জানা যায়, সরিষাবাড়ী উপজেলায় আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাতে ১৪৩টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে এবং এতে এক হাজার ৬৭২ জন শিক্ষক কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক ও কর্মচারীদের একমাত্র আয়ের উৎস শিক্ষার্থীদের বেতন। কিন্ডারগার্টেন সমূহে আয় সীমিত হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতাও কম। বিধায় এই সেক্টরের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ সারা বছরই মানবেতর জীবন যাপন করে থাকে। শিক্ষকতার পেশা বেছে নেয়ায় তাঁরা দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত হলেও কারও কাছে হাত পাততে পারে না। কিন্ডারগার্টেন সমূহে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষার প্রস্ততি থাকলেও হঠাৎ করে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় এর সাথে জড়িত শিক্ষক ও কর্মচারীরা পড়ে বিপাকে। পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে কিন্ডারগার্টেন সমূহে বেতনাদি আদায় হয়ে থাকে। সকল প্রতিষ্ঠানেই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শিক্ষার্থীর বেতন অনাদায়ী রয়েছে। অভিভাবকদের সাথেও এমতাবস্থায় যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। সকলেরই কাজ কর্ম বন্ধ থাকায় অভিভাবকগণও চরম বিপাকে পড়েছে।

নামপ্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক এ প্রতিবেদককে জানান, শিক্ষকদের বলা হয় জাতির মেরুদন্ড। আজ আমরা যারা কিন্ডারগার্টেন সাথে জড়িত হয়ে শিক্ষা প্রদান সেবা করে যাচ্ছি। দেশকে উন্নতি করতে আমাদের অবদান কিছুটা হলেও তো আছে। করোনার এই সময়ে আমাদের পাশে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছি। কঠিন এই সময়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করি।

সরিষাবাড়ী কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আন্নু মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, করোনাভাইরাসের এই সময়ে ন্যূনতম শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবিকা নির্বাহের জন্য আর্থিক সহযোগিতা ও সকল শিক্ষক কর্মচারীদের রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করে এই সেক্টরটি বাঁচিয়ে রাখার দরকার। সেই জন্যে গত ৩ মে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এবং ১১ মে জামালপুর জেলা প্রশাসক বরাবরে ৫৭ পাতার ডাটাবেজসহ একটি আবেদন পত্র জমা দেওয়া হয়। অদ্যাবধি এ ব্যাপারে সরকারের কোন সহযোগিতার আশ্বাস না পাওয়ায় কিন্ডারগার্টের শিক্ষক-কর্মচারীরা দারুণ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের সহায়তার জন্য একটি আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সরকারি ভাবে কিন্ডারগার্টেনের জন্য কোন সহায়তা আসলে তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।