মাদারগঞ্জের ১৫০ বছরের প্রাচীন মসজিদ

মাদারগঞ্জের ১৫০ বছরের প্রাচীন তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ।ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জাহিদুর রহমান উজ্জল, মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

১৫০ বছরের প্রাচীন মাদারগঞ্জের সর্বপ্রথম তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর তালুকদার বাড়িতে অবস্থিত। এই মসজিদটি সেই সময়ে এই এলাকায় ইসলাম প্রচার ও প্রসারে বড় ভূমিকা রাখে।

মসজিদটি বাংলা ১২৭৬ সালে নির্মাণ করেন জামালপুর জেলার বিশিষ্ট দানবীর মাদারগঞ্জের তালুকদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা হাজী ফাজেল মাহমুদ তালুকদার। মসজিদটি নির্মাণের পর ১৩০৪ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই বছরেই আবার তা সংস্কার করা হয়। এতে ব্যয় হয় ৮ হাজার রোপ্যমুদ্রা।

মসজিদটি নির্মাণ শৈলী ছিল ইসলামি স্থাপত্যকলায়। নানান ধরনের চিত্রে ভরা ছাদ ও কলাম। তিন গম্বুজের পাশাপাশি মসজিদের চার কোণে চারটি সুদৃশ্য মিনার রয়েছে। সেই সময়কার চুন সুরকির গাঁথুনির জন্য ময়মনসিংহের আকুয়া থেকে সুদক্ষ রাজমিস্ত্রি নিয়ে আসা হয়েছিল। গম্বুজের কারুকাজ করার জন্য চীন থেকে সিরামিক টুকরো নিয়ে আসা হয়। গম্বুজের চূড়ায় বসানো হয় পিতলের কলসি।

মসজিদের কার্ণিশগুলিতে বর্ণিল স্থাপত্যকলার চিহ্ন রয়েছে। মসজিদের দরজায় রয়েছে বর্ণিল চিত্রকলা। আরবি হরফে লেখা। জানালায় রয়েছে কারুকাজময় চিত্র। কয়েকবার সংস্কারের ফলে আগের সৌন্দর্য্য অনেকাংশে ঢাকা পড়েছে।

হাজী ফাজেল মাহমুদ ১৯১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করলে মসজিদের পাশে তাঁকে সমাধিত করা হয়। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর ছেলেরা এই মসজিদটি কয়েকবার সংস্কার করেন।

এই ঐতিহাসিক মসজিদটি বর্তমানে বয়সের ভারে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ছাদ ও কলাম ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। যেকোন মুহূর্তে এটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বর্তমানে একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। এই প্রাচীন মসজিদটি প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সংরক্ষণের দাবি জানাচ্ছেন তালুকদার পরিবারসহ এলাকাবাসী।