সরকারি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সংশোধনী গঠনতন্ত্র অনুমোদনের সুপারিশ

সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ করেন সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা, জামালপুর প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল চেয়ে নতুন করে বাংলাদেশ ২০তম গ্রেড হতে ১৬তম গ্রেড সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত কর্মচারী সমিতি’ নামে প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র অনুমোদনের আবেদন জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মিলনমেলা প্রস্তাব বাস্তবায়ন জামালপুরের আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ।

জানা গেছে, ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মুছে যাওয়া ইতিহাসকে লিপিবদ্ধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সাথে আলোচনায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান কার্যালয় ও জামালপুরে উপ-প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কৃতিত্বের কথা গঠনতন্ত্রে লিপিবদ্ধ করে সংশোধিত গঠনতন্ত্র দাখিল ও অনুমোদন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মিলনমেলার আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মো. হেলাল উদ্দিনসহ অন্যান্য চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারীরা।

সম্প্রতি এ উপলক্ষে জামালপুর সদর-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেনের কাছে প্রস্তাবিত ও সংশোধিত গঠনতন্ত্রকে স্বাগত জানিয়ে তাদের প্রস্তাবিত ও সংশোধিত গঠনতন্ত্রে সুপারিশ করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আশ্বাস দেন। জেলা প্রশাসকসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দও এতে সুপারিশ করেছেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানি শাসকদের জুলুম অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা যখন তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায় আন্দোলনে ডাক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে যখন মিছিল বের করেন, তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতৃত্বে থাকা অবস্থায় চতুর্থ শ্রেণির সেই আন্দোলন-মিছিলে সমর্থন ও পুরো আন্দোলনের নেতৃত্ব প্রদান করে তৎকালীন ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন।

সে অবস্থান ধর্মঘটের কারনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধুকে কারারুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব বাতিল করে শর্ত দেয়া হয় যে, আন্দোলন থেকে সরে এসে মুচলেকা দিয়ে আপনার ছাত্রত্ব ফেরত নিতে হবে। অন্যথায় ছাত্রত্ব বাতিলের করা হবে। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চতুর্থ শ্রেণির এই কর্মচারীর বৃহৎ স্বার্থের জন্য জেল খাটেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন। তবুও দাবি পূরণে সোচ্চার ছিলেন বঙ্গবন্ধু।

অথচ ১৯৫০ সালে বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির নামে অনুমোদনের কথা বলা থাকলেও ৭০ বৎসর পেরিয়ে গেলেও কিন্তু কোনো কেন্দ্রীয় পরিষদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর এই ত্যাগের কথা লিপিবদ্ধ করেনি। ১৯৭২-১৯৮৭ ও ১৯৯৫ সালে সংশোধন করা হলেও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মূল ইতিহাস থেকে বঞ্চিত করে মিথ্যাচারের মাধ্যমে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কেন্দ্রীয় কমিটি পরিচালনা করছেন এবং পরবর্তীতে ২০০২ সালে গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত সংশোধন করা হলেও বঙ্গবন্ধুর এই ত্যাগের কথা লিপিবদ্ধ করা হয়নি।

তাই জামালপুরের আহ্বায়ক কমিটি বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন আত্মজীবনী সংগ্রহপূর্বক এই ইতিহাস খুঁজে বের করে বিগত ২০১৯ সালের ১২ মে জামালপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও সমগ্র বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মিলনমেলার প্রস্তাব পাঠিয়ে এর কার্যক্রম শুরু করেন।