জামালপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভায় ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

সভায় বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. এনামুর রহমান। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা এবং ত্রাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি ও সমস্যা সরেজমিনে দেখতে দ্বিতীয় বার জামালপুর আসলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. এনামুর রহমান। ২৫ জুলাই রাত সাড়ে ১০টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বিশেষ জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. শাহ কামাল।

জামালপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম, জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ টি এম কামরুল ইসলাম তাং, সিভিল সার্জন চিকিৎসক গৌতম রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাছির উদ্দিন, জামালপুর প্রেসক্লাবের সহসভাপতি দুলাল হোসাইন, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক ও অনলাইন পত্রিকা বাংলারচিঠিডটকম এর সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর।

সভার শুরুতেই ক্ষয়ক্ষতির বিবরণসহ সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ বিতরণের চিত্র ও প্রাণহানীর ঘটনা তুলে ধরা হয়। এক্ষেত্রে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. শাহ কামাল ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে বিভিন্ন দপ্তরের পরিকল্পনা জানতে চাইলে দপ্তর প্রধানগণ সদোত্তর দিতে পারেন নি। একাধিক জেলা দপ্তর প্রধানের অনুপস্থিতিতে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া এখনো কেনো ছয়শ’ মেট্রিক টন চাল গুদামে পড়ে আছে এর ব্যখ্যা চান।

জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন দাবি করে বলেন, চলতি বন্যায় সদরের ১৩টি ইউনিয়ন এবং জামালপুর পৌরসভার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ বরাদ্দের ক্ষেত্রে অসম বন্টন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর কাছে সদরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ লাগবে অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করেন।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম বলেন, ইতিহাসের ভয়াবহতম বন্যায় গত ১০ বছরের ঈর্ষণীয় উন্নয়নের ৮০ ভাগ ধংস করে দিয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে হলে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। তিনি বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখে দুঃখ প্রকাশ করেন।

প্রধান অতিথি দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. এনামুর রহমান বলেন এই ভয়াবহ বন্যার মধ্যেও মানুষের মধ্যে হাহাকার নেই। কেউ খোলা আকাশের নীচে বাস করছে না। সরকারের কাছে প্রচুর খাদ্য মজুদ আছে। কেউ না খেয়ে থাকবে না। জামালপুরে ত্রাণের চাহিদা পুরনে আরো তিনশ’ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। এছাড়া পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য চাহিদা মোতাবেক বরাদ্দ দেওয়া হবে। জামালপুরে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও মুজিব কেল্লা নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি জাপানের অর্থায়নে ও কারিগরী সহায়তায় ভূমিকম্প সহন বাড়িঘর নির্মাণ করা হবে।