ইসলামপুরে বন্যায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ত্রাণ বিতরণ শুরু

বন্যার পানিতে ডুবে যাচ্ছে চিনাডুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি : লিয়াকত হোসেন লায়ন

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে যমুনার যমুনার পানি ১৪ জুলাই বিকেল থেকে বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বন্যাকবলিত এলাকায় ইতিমধ্যে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে।

ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা নদীর পানি বাড়তে থাকায় উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রামে হু হু করে পানি ঢুকে বন্যা দেখা দিয়েছে। পানির তোড়ে উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নে পূর্ববামনা ও উলিয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ সড়ক বাঁধে ভাঙনসহ ডেবরাইপ্যাচ সেতু দেবে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও দেওয়ানপাড়া সেতু ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়াচর, বরুল গ্রামে প্রায় ৫০টি পরিবার নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে।

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্ততি নিয়েছে। বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

উপজেলা পরিষদের চেযারম্যান এস এম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল বলেন, বন্যার্তদের পাশে উপজেলা প্রশাসন সব সময় আছে। এলাকায় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকেও আমরা খেয়াল রাখছি।

ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউনিয়নের বামনা গ্রামে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এদিকে ১৪ জুলাই দিনব্যাপী উপজেলার চিনাডুলী, সাপধরী ইউনিয়নে ৩০০ বন্যার্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণের চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদী হাসান টিটু, সিএলপি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, চিনাডুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বাংলারচিঠিডটকম বলেন, বন্যা মোকাবেলায় আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত বেলগাছা, চিনাডুলী ও সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদে ২ মেট্রিক টন করে চাল ও ১৫০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণ সামগ্রীতে এক কেজি মিনিকেট চাল, দু্ই কেজি চিড়া, এক কেজি চিনি, এক লিটার সয়াবিন  তেল, এক কেজি মসুরের ডাল, এক কেজি লবণ ও ৫০০ গ্রাম নুডলুস রয়েছে।