সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে বারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

১৭ জুন দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামস জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন। আদালত একই সাথে আগামী ৩০ জুন এ মামলার চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য করে দেন।

১৬ জুন দুপুরে রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা থেকে শাহবাগ থানার পুলিশ মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে এবং থানায় নিয়ে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মারুফ হোসেন সরদার জানান, শাহবাগ থানা পুলিশ সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে ১৭ জুন সকালে ফেনীর সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে ১৭ জুন দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করার আগ পর্যন্ত মোয়াজ্জেমকে কোর্ট হাজতে রাখা হয়।

তিনি জানান, পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) নেতৃত্বে সোনাগাজী থানা পুলিশের একটি টিম ঢাকায় অবস্থান করছে। তাদের কাছে ওসিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারাই তাকে ১৭ জুন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে নিয়ে যায়।

উল্লেখ যে,ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

পরবর্তীতে নুসরাতকে আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়ার ক’দিন পর সে মারা যায়।

নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় গেলে থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। পরোয়ানা জারির দু’দিন পর মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।

গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে, এমন সংবাদ দিলে সে (নুসরাত) ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যায়। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫ জন ছাত্রী নুসরাতকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে কোরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়। সূত্র : বাসস