ধারাবাহিকতা চান মাশরাফি

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক: উড়ন্ত জয় দিয়ে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে দ্বাদশ বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ। ২ জুন রাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টাইগাররা ২১ রানে হারিয়েছে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তবে একটি জয় দিয়েই সব কিছু বিচার করতে চান না বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দলকে আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। তাই দলের সকলকে স্বাভাবিক থাকাটা খুবই জরুরি বলে মনে করেন ম্যাশ।

কেনিংটন ওভালে দুর্দান্ত জয়ের পর ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘সবাই যদি সেরা খেলার চেষ্টা করে অবশ্যই সামনে আমাদের আরও ভালো করার সুযোগ আছে। আমাদের দলের সবার স্বাভাবিক থাকাটা জরুরি। আমরা আরো একটি ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছি। বিশ্বকাপে এখনো আমাদের আটটি ম্যাচ বাকি আছে। একটি ম্যাচ জিতে আমরা টুর্নামেন্টের কোথাও নেই। ভক্তরা উত্তেজিত-উল্লসিত হলেও আমাদের এরকমটা হওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। আমাদের এখনো বহুদূর যেতে হবে।’

দলের খেলোয়াড়দের পারফরমেন্সেও খুশি মাশরাফি। তবে সামনের ম্যাচগুলোতে আরও ভালো করার উপায় আছে বলে মনে করেন তিনি। ম্যাশ বলেন, ‘আমি দলগত পারফরম্যান্সে খুশি। আমরা আসলে এমনই দল। সবাই যখন অবদান রাখি তখন বেশিরভাগ সময় ম্যাচ জয় করতে পারি। আজ আমরা ভাগ্যবান ছিলাম। সেই সাথে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি বলেই ভালো একটি জয় পেয়েছি।’

টুর্নামেন্টের শুরুতেই শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে নাস্তানাবুদ করলো বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের অন্যদলগুলোর জন্য এটি কোন বার্তা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, ‘আমরা যদি এই টুর্নামেন্টে ভালো করতে চাই, বড় দলকে আমাদের হারাতে হবেই। টুর্নামেন্টে সব দলই শক্তিশালী। আমার কাছে মনে হয়, টুর্নামেন্টে ভালো করতে চাইলে এসব ম্যাচ আমাদের জিততে হবে। একটা ম্যাচ জিতেই আমরা এখনো টেবিলের কোথাও নাই। ২ পয়েন্ট দিয়ে কিছুই হবে না এখন। তাই আমাদের চিন্তা করতে হবে, ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা এবং জয় তুলে নেয়া।’

শুধুমাত্র ধারাবাহিকতাই নয়, ভাগ্যও সাথে থাকতে হবে বলে মনে করেন মাশরাফি, ‘আমি ভাগ্যে বিশ্বাসী। অবশ্যই আমরা পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে নামি, প্রত্যকটা দলই তা-ই করে। আর পরিকল্পনা করলেই যে, ঐ পরিকল্পনা কাজে লাগে তাও নয়। তাই ভাগ্যের সহায়তা থাকতে হয়। এসব টুর্নামেন্টে সেরা ফলাফলটা করতে চান, তবে আমাদের ভাগ্যের সহায়তা পেতে হবে। আজ আমাদের ভাগ্য ভালো ছিলো।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ব্যাট-বল হাতে সেরা পারফরমেন্সই করেছেন সাকিব আল হাসান। তাই ম্যাচ শেষে সেরা পুরস্কার পেয়েছেন তিনিই। এজন্য সাকিবের প্রশংসা ঝড়লো মাশরাফির কন্ঠে, ‘সাকিব অবশ্যই আমাদের সেরা খেলোয়াড়। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। সাকিব এমন একজন খেলোয়াড়, তাকে সবাই এখন অন্য চোখে দেখে। আমি বা আমরা কিভাবে দেখি সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। আমি নিশ্চিত যে, সে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করে। এটা অবশ্যই ওর কাছে ভালো লাগে। চার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই হাফ-সেঞ্চুরি করেছে। এটা অবশ্যই তার জন্য ভালো স্মৃতি।’

বিশ্বকাপের জন্য এবার ইংল্যান্ডে ঈদ করতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। তাই জয়ের আনন্দকে সঙ্গী করেই ঈদ উদযাপন করবে টাইগাররা। কিন্তু বিশ্বকাপের জন্য দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ঈদের ভাবনাই নেই। খেলা নিয়েই শুধু ভাবতে চান বলে জানান মাশরাফি, ‘এ বছর আমরা ঈদ ভাবনায় আনিনি। ঈদ হচ্ছে খেলার মধ্যে। খেলাটা উপভোগ করছি। আমাদের কাজই এখন এটা। কারও কারও পরিবার এসেছে ইংল্যান্ডে। আশা করি পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটবে। ঈদের চেয়ে এখন গুরুত্বপূর্ণ যে কাজে এসেছি, সেটা ভালোভাবে শেষ করা। বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের বিদেশে ঈদ করার অভিজ্ঞতা নতুন নয়। বরং অন্যবারের তুলনায় এবার বিদেশে ঈদ ভালো কাটার কথা তাঁদের। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর আনন্দ, সঙ্গে থাকছে পরিবার।’ সূত্র : বাসস